spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগদ্যআরশি নিকেতন : ২৭

ধারাবাহিক আত্মজীবনী : তৈমুর খান

আরশি নিকেতন : ২৭

তৈমুর খান

২৭

লিটিল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশও এক পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতা

দীর্ঘদিন থেকেই একটানা অনেকের বইয়ের রিভিউ করে চলেছি। একজন কবির যতগুলো বই বেরিয়েছে— প্রায় সবগুলোরই রিভিউ লিখেছি। প্রতিটি রিভিউ দৈনিক সংবাদপত্র ‘সুখবর’ অথবা অন্য কোনো ছোট পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে। রিভিউ লিখতে লিখতেই আমার জীবনের অনেকটা সময় কেটে গেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমার বইয়ের রিভিউ লিখেছেন এমন কারও চারজনের নামও আমি বলতে পারব না। মুখে অনেকেই বলেছে, “হ্যাঁ লিখে দেবো।” কিন্তু তারপরে আর লিখতে পারেননি। আমি কখনো কাউকেই জোরও করিনি। কবিতার পাঠক কম থাকলেও, আমার গদ্যগুলিরও পাঠক তেমন পাইনি। আমার ক্ষেত্রে কেন এত উদাসীন? এই প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে বারবার জেগে উঠেছে। আসলে আমি কারও সঙ্গেই গভীরভাবে সম্পর্ক গড়তে পারিনি। কয়েকজনের মধ্যেই আমার লেনদেন সীমাবদ্ধ। কয়েকজন অধ্যাপক-অধ্যাপিকার সঙ্গে পরিচয় থাকলেও সেভাবে আন্তরিকতার কখনো খোঁজ পাইনি। স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। প্রায় নির্বাসিতের মতন জীবনযাপন আমার। বহু শ্রম ব্যয় করে ‘দৌড়’ পত্রিকা আমাকে নিয়ে সংখ্যাটি করে। বহু চেষ্টা করে কয়েকজনকে দিয়ে লেখানো হয় আমার সম্পর্কে। যদিও কোনো লেখাই পর্যাপ্ত নয়। তবু কিছুটা আলোকপাতে আমি খুশি হয়েছিলাম।
আজও কেউ যখন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান, কিংবা সংবর্ধনা দেওয়ার কথা বলেন, তখন বড় বিড়ম্বনায় পড়ে যাই। কোনো অনুষ্ঠানেই আমার মত থাকে না। সংবর্ধনা নেওয়ার ইচ্ছা একেবারেই নেই। পুরস্কার-টুরস্কার সেসবও বড় বোঝা মনে হয়। তাই আজ পর্যন্ত বড় কোনো লেখক-কবির সঙ্গে আমার ছবি তোলা হয়নি। যাওয়া হয়নি কফি হাউসের আড্ডায়। বাঁশবনে ঘেরা খড়ে ছাওয়া চালের বাঁশের খুঁটি দেওয়া মাটির বাড়িতে যখন থাকতাম। সন্ধে লাগলেই বাড়ির চারিপাশে শেয়াল ডাকত। বর্ষা দিনে এক হাঁটু কাদা মাড়িয়ে ঢুকতে হতো বাড়ি। তখনই চিঠি পেয়েছিলাম কবিতা লেখার ‘দেশ’ পত্রিকার দপ্তর থেকে। হয়তো সেইটাই ছিল আমার কাছে বড় সম্মানের। আর সেই চিঠি পাওয়া আজও বন্ধ হয়নি। বাজারে অনেক পত্রপত্রিকা আছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত সেভাবে কেউ চিঠি লিখে কবিতা নেয়নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন ‘কৃত্তিবাসে’ লিখেছি। কয়েকটি গদ্য এবং দীর্ঘ কবিতাও। তিনি কয়েকটি চিঠিও লিখেছিলেন আমার লেখার বিষয়ে। সামনাসামনি কখনো পরিচয় হয়নি, তবু অনেক কথা হয়েছে। তেমনি মলয় রায়চৌধুরী, দেবী রায়, শুদ্ধসত্ত্ব বসু, শ্যামলকান্তি দাশ, সৈয়দ কওসর জামাল, সোহরাব হোসেন প্রমুখ আরও কয়েকজন। তবে বীরভূম জেলার এবং মুর্শিদাবাদের অনেকেরই কাছাকাছি যেতে পেরেছি। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—আবদুর রাকিব, শচীন বন্দ্যোপাধ্যায়, ফজলুল হক, কবিরুল ইসলাম, লিয়াকত আলি,আদিত্য মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এঁদের মধ্যে শুধুমাত্র ফজলুল হকই আমাকে নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। অবশ্য আরও কয়েকজন তরুণও এই দলে আছেন।
আমার বইয়ের পাঠক যখন কম, তখন নিজের লেখা নিজেই পড়ি। নিজেই পাঠক হয়ে নিজের সামনে দাঁড়াই।
—কী এমন লিখেছিস যে তোর বই পাঠকে পড়বে?
—না, তেমন কিছুই লিখতে পারিনি। তবু যা লিখেছি সব সত্যি লিখেছি।
—নিজের লেখা সম্পর্কে ওরকম মনে হয়। ওরকম অভিমান হয় পাঠকের ওপর।
—সে তো হবেই!নিজের লেখাটি নিজের কাছেই সৎ থাকে চিরদিন। আসলে আমি তো কবিতা, প্রবন্ধই বেশি লিখেছি। কিছু গল্প লিখেছি যা প্রচলিত রীতির গল্প নয়। প্রতিটি গল্পই আমার আত্মজীবনীর কথা। আর কবিতাগুলি আমার হৃদয়ের ক্ষরণ, আর্তনাদ। তাই কবিতাকে আমি আত্মধ্বনি বলেছি। প্রবন্ধগুলিতে আমার জীবনের উষ্ণতা মেপেছি। যদিও কবিতা বিষয়ে নিজের উপলব্ধির কথা বারবার এসেছে, অন্য কবিদের মূল্যায়ন করেছি, তাতেও আমার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়নি। খুব আন্তরিকভাবেই অন্তরের স্পন্দন প্রতিফলিত হয়েছে।
—অবশ্য তা ঠিক। সাঁইথিয়া হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীরেশ্বর সিংহ মহাশয় ‘কবির ভাঁড়ারের চাবি’ পাঠ করে তাই বলেছিলেন, “কোন ধরনের গদ্য তা ঠিক নাম দিয়ে উল্লেখ করতে পারছি না। একবার মনে হচ্ছে গল্প, একবার মনে হচ্ছে রম্য রচনা, একবার মনে হচ্ছে প্রবন্ধ, আবার কোথাও কোথাও আত্মজীবনী। এরকম গদ্য বাংলা সাহিত্যে আমি পড়িনি।” ৮৫ বছরের মানুষটির এই মূল্যায়ন আমার মনে আছে।বহরমপুরের ‘ঝড়’ পত্রিকার সম্পাদক রবিন বিশ্বাসও প্রায় একই রকম বলেছিলেন, “কবিতা বিষয়ে আলোচনা ঠিক নয়, প্রগাঢ় এক উপলব্ধির প্রকাশ। এ ধরনের গদ্য লিখতে মস্তিষ্ক না হৃদয়—কোনটার বেশি প্রয়োজন তা ঠিক ধরতে পারিনি!অথচ পড়তে গিয়ে একটা নেশার মতন পেয়ে বসেছে।” হয়তো এই মূল্যায়নগুলিই ব্যতিক্রম হয়ে উঠেছে।
—তা বলাই বাহুল্য। আজকের কোনো তরুণ কবি সেভাবে আর বই পড়েন না। শুধু নিজের লেখাটি প্রকাশ করে অন্যকে পড়াতে চান। জোর করে আলোচনা লিখিয়ে নিতে চান, কিন্তু ঐতিহ্যকে স্বীকার করেন না। আমার কবিতা সমগ্রগুলির একটারও আলোচনা হয়নি। পরবর্তী গদ্যের বইগুলিরও হয়নি। প্রায় সবাই এড়িয়ে গেছেন।
—অবশ্য আমি পড়ে দেখেছি। কবিতার মধ্যে এক ধরনের বৈরাগ্য, শূন্যতার দর্শন সর্বদা বিরাজ করে। ওই যে নাথিংনেস্ তত্ত্ব অর্থাৎ সমূহ জীবনের আয়ু যোগ করে যে ফল পাওয়া যায় তা কিছুই নয়। নাথিংনেস্ তো তাই! জন্মের আগে কোথায় ছিলাম, মৃত্যুর পরও কোথায় থাকব তার সবই অন্ধকার। মাঝখানে কিছুটা পথ অতিক্রম করা যা আয়ুর সাঁকো মাত্র। এই সাঁকোতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার পরিণতির দিকে একটু ঝুঁকে দেখা। সেখানে বিরাট শূন্যতা । এই শূন্যতাকে অতিক্রম করা যায় না। এখানেই স্রষ্টা, এখানেই পরকাল, এখানেই রহস্য।
—কিছুটা সত্য হলেও সবটা তা-ই নয়। কেননা আয়ুর সাঁকোর মধ্যেই বাস্তব পৃথিবীর সংঘাত বিরাজ করে। রাজনীতি, চক্রান্ত, কৌশল, ঘৃণা,বিভেদ, বিদ্বেষ, হানাহানি সবই রয়েছে। শূন্যতার দিকে যেতে যেতে এসবকেও উপেক্ষা করা যায় না। তাই সমসাময়িক চিৎকারটির ছবি ফুটে ওঠে কবিতায়। অর্থাৎ ব্যক্তিচেতনা, সময়চেতনা থেকে আধ্যাত্মিকচেতনার প্রান্তর কবিকে অতিক্রম করতে হয়। যেদিন কবি উপোস থাকলেন, যেদিন খুবই কাঁদলেন, যেদিন কবি অপমান হলেন সবই লেখা হলো তাঁর কবিতায়। কবি কখনো ডায়েরি লেখেন না, প্রতিটি কবিতাই ডায়েরি হয়ে ওঠে।
—তাহলে লোকে বারবার কেন অভিযোগ করে—কবিতা কিছুই বুঝতে পারি না? কী লেখেন তা কবিই জানেন!
—আবার সেই পুরনো কথাটিই বলতে হয়—পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো কবিতা সেইটিই— যেটি পড়ে বোঝা যায় না। কবিতা আমজনতার প্ল্যাটফর্ম হবে কেন? কবিতার পরিশীলিত পাঠক নাহলে, তীব্র ও সূক্ষ্ম অনুভব ক্ষমতা না থাকলে তিনি কী করে কবিতাকে আপন করে নেবেন? কবিতা পড়ে একটরকমের ভালোলাগা তার উপলব্ধিতে শিহরন জাগাবে। তিনি তা ভাষায় প্রকাশের জন্য চেষ্টা করেও ভাষা খুঁজে পাবেন না। তিনি তার ব্যাখ্যা করতে চাইলেও ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। ভাষার যেখানে শেষ, প্রকাশের যেখানে ব্যর্থতা—কবিতা তো সেখানেই বিরাজ করবে। অনুভূতির যেমন ভাষা নেই, তেমনি হৃদয়েরও মুখ নেই। কবিতা সেখানেই ছায়া ফেলে।
—বেশ চমৎকার কথা। এরকমই একটি কবিতা দেখতে চাই।

“সাইকেল মিস্ত্রি

জীবনের চাকা ঘুরছে না আর
শব্দের খিলানে উপলব্ধির অদ্ভুত বৈরাগ্য
বোধের হাতুড়ি ঠুকে ঠুকে চলছে মেরামত

চাকা কি মেরামত হয়?
নিজের কাছেই প্রশ্ন উঠে আসে
আর নিজেই ব্যর্থ মিস্ত্রি
দার্শনিকের মতো উদাসীন হই

গোলাপি হাতের তালু ক্রমশ হলুদ হয়ে আসে
বাতাবি লেবুর বন কাঁপতে থাকে ঝড়ের সংকেতে
একজোড়া কপোত-কপোতী ডানা শুকিয়ে চলে যায়
বেদনার বৈভবে স্বপ্নের প্রশ্রয় কারা দ্যায়?

আনচান করা বিলম্ব কিছুটা তৃষ্ণার্ত হলে
সস্নেহ মাটির কাছে স্মৃতির করুণা ফিরে চায়
হয়তো গড়াবে চাকা নিশ্চিত শূন্যতার ভিতর
গোধূলির রহস্য বার্তায় কেবল নিজেকে
এক সাইকেলমিস্ত্রি মনে হয়!”

জীবন একটি সাইকেলের মতো। এর চাকা না ঘুরলে কি মেরামত করা যায়? সেই প্রচেষ্টাই এখানে রয়েছে। সাইকেল মিস্ত্রি বাস্তব চেতনায় প্রাপ্ত একটা রূপকাশ্রয় মাত্র। আসলে জীবনের রূপকার। জ্ঞান-চেতনাসর্বস্ব এই জীবনের পরিধি অতিক্রম করে চলেছে। কিন্তু জীবন জুড়ে শুধু শূন্যতারই বিস্তার। গোলাপি হাতের তালু এক সময় হলুদ হতে থাকে। অর্থাৎ যৌবন অতিক্রম করলেই আসে সংকেত। কপোত-কপোতির দিন শেষ হয়। বেদনার বৈভবে তবুও স্বপ্নের আরতি। স্মৃতির টান থেকে তৃষ্ণা অনুভব করেই সাইকেল মেরামত চলতে থাকে। আর গোধূলির রহস্যবার্তা ঘনীভূত হতে থাকে প্রলুব্ধ মৃত্যুর কাছে। কিন্তু তবুও এই কবিতার ব্যাখ্যা করা যায় না। আনচান করা বিলম্বের তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠা কেমন তা কি আমরা জানি? নিশ্চিত শূন্যতার ভেতর হয়তো গড়াবে চাকা— বক্তব্যটিতে ‘হয়তো’ অনিশ্চয়তা সূচক শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে জীবনের যাত্রাপথকেও দোলাচল করা হয়েছে। কবিতা যে সরাসরি বক্তব্য নয়, আবেগের প্রদীপ্ত বয়ান নয়—তা এখানে স্পষ্ট।
যেখানে এত কবির এত কবিতা লেখা হয়, সেখানে পাঠকেরও বিবমিষা হতে বাধ্য। ভালো-মন্দের বিচার করার ক্ষমতাও লুপ্ত। লিটিল ম্যাগাজিনগুলি কখনো কখনো হালকা চটুল ছড়ার পাশে এইসব ভারিক্কি কবিতাও ছাপে। সম্পাদকের কবিতা বিষয়ে বোধ যে একেবারে শূন্য—তা বলাই বাহুল্য। তাই মাঝে মাঝে মান-অভিমান হলেও সম্পাদকদের ক্ষমা করে দিই। বানানের নতুন সংস্করণ কেউ কেউ মানেন না। সেক্ষেত্রে বানানও পাল্টে দেন। আবার কবিতার ভাব উপলব্ধি করে পড়তে হয় বলে অনেক সময় যতিচিহ্নও ব্যবহার করি না। তখন প্রশ্ন তোলেন, “যতিচিহ্ন বসাননি কেন?” বেশ কিছু সম্পাদক কবিতার লাইন কেটে নতুন শব্দ বসিয়ে কবিতার সরলীকরণ রূপও দিয়েছেন। একবার একটা কবিতায় লিখেছিলাম “জন্মসূত্র লিখেছে `সাবধান’।” সম্পাদক করে দিলেন “জন্মসূত্র লিখেছে সমাধান।” আর একটি কবিতায় লিখেছি “তীরে কার ছায়ার আড়ালে শূন্যে চেয়ে থাকি”। সম্পাদক ছাপিয়েছেন “তীরে কার ছায়ার আড়ালে পুণ্যে চেয়ে থাকি”। আর একটি কবিতায় লিখেছি “নিজেই নিজের বিশেষণ”। ছাপানোর পর হয়েছে “নিজেরাই নিজেদের বিশেষণ”। আর একটি কবিতায় লিখেছি “নিজেরই ছায়াব় পাশে”। সম্পাদক ছাপিয়েছেন “নিজেরাই ছায়ার পাশে।আর একটি কবিতায় লিখেছি “পলাশ বনের নির্জন ঝরে”। সম্পাদক ছাপিয়েছেন “পলাশ বনের নির্জনে ঝরে”।
এমনি বেশ কিছু শব্দ পাল্টে যায় : আকাঙ্ক্ষা, শিহরন, ধরন, ঝরনা, মফস্সল, বুদ্ধিজীবী, শূন্য, সত্তা, বউ, কোনও, দাবি, দুর্গা, খ্রিস্টাব্দ, তির, হইচই, সাক্ষাৎ, ফেরত, তফাত,উচিত, দুরবস্থা, সরকারি, অঘ্রান, ঊর্ধ্ব, একাকী, ভূরি ভূরি ইত্যাদি ।
আসলেই সব সম্পাদকেরাই লেখা সম্পর্কে যেমন যত্নশীল নন, তেমনি বানানবিধি সম্পর্কেও জ্ঞাত নন। কবিতা সম্পর্কেও তাদের স্পষ্ট ধারণা নেই। সেদিন ফেসবুকে হঠাৎ করেই চোখে পড়ল ‘শিকার’ শব্দটির বানান এক সম্পাদক লিখেছেন ‘স্বীকার’। “নারীরা স্বীকার হয় পুরুষের লালসায়….” পড়ে চমকে গেলাম। সেই সম্পাদক ৩০ খানা সংকলন সম্পাদনা করেছেন। তার একটুকরো কবিতায় ডজন খানেক বানান ভুল আছে। দেখে শুনে মনে হচ্ছে লিটিল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশও এক পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতা।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ