ইমরুল হাসান
১. পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি বইলা কি কিছু ছিল? বা কোন বামপন্থী দল, পুব ও পশ্চিম মিইলা অল পাকিস্তানের? বরং পুর্ব পাকিস্তানের যেই কমিউনিস্ট পার্টি ছিল তারা ইনডিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে পার্টিসিপেট করছিল… মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ১৯৪৭-এর ভোটাভুটিতে বাম-ঘরানার লোকজন খালি ইন্ডিপেন্ডেড বেঙ্গলের বিপক্ষেই ভোট দিয়া ইনডিয়ার লগেই থাকতে চায় নাই, বরং রাষ্ট্র হিসাবে পাকিস্তানরে কখনোই মাইনা নেয় নাই, এবং ইনডিয়ার পার্টই হয়া থাকতে চাইছে
২. বাংলাদেশ হওয়ার পরেও প্রো-ইনডিয়ান একটা ফোর্স হিসাবেই সবসময় এক্টিভ ছিল, এবং আছে, যেই কারনে একটা শিকখিত মিডল-ক্লাসের বাইরে বামপন্থি লোকজন কখনোই বাংলাদেশে একটা পলিটিকাল ইনফ্লুয়েন্স তৈরি করতে পারে নাই
৩. মিডল-ক্লাসের ভিতরেও শিকখিত হিন্দু ও পরে নাস্তিকদের সংগঠন হিসাবে পরিচিতি পাইছিল; মানে, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, দাড়ি রাখে, টুপি পরে এইরকম কমিউনিস্ট আপনি পাইবেন না, মাওলানা ভাসানী একটা একসেপশনই, যারে আসলে কমিউনিস্টরা ভাঙাইয়া খাইছে, এবং এখনো খাইতেছে
৪. যেহেতু স্ট্রং কোন পলিটিকাল ফোর্স হয়া উঠতে পারে নাই, পুব পাকিস্তানে ও বাংলাদেশে কমিউনিস্টদের মেইন ইন্টারভেনশনটা ছিল কালচারাল; এখনো বামপন্থী রাজনীতি করা মানে যতটা না একটা পলিটিকাল পজিশন তার চাইতে অনেক বেশি একটা কালচারাল আইডেন্টিটির ঘটনা… যেই কারনে দেখবেন ছাত্র ইউনিয়ন অনেক বেশি পপুলার একটা ঘটনা হয়া উঠছিল (মোস্টলি ১৯৬০-১৯৯০), এই সময়টাতে; তো, এইটা অই কালচারাল আইডেন্টিটিরই ঘটনা
৫. হাউএভার, ১৯৭১’র পোস্ট-এফেক্ট হিসাবে বাংলাদেশে নানান ধরনের সরকারি ও বে-সরকারি বিপ্লবি রাজনীতি শুরু হয়, কিনতু এইগুলার কোনটাই প্রো-পিপল ঘটনা হয়া উঠতে পারে নাই, বরং এরপরে বাংলাদেশে যে রাজনীতির ‘বি-রাজনীতিকরন’ হইছে, তাতে একটা মেজর রোল প্লে করছে এই ‘বিপ্লবি রাজনীতি’ এবং এইভাবে আরো ‘জন-বিচ্ছন্ন’ই হইছে
৬. ১৯৯০’য়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পুব ইউরোপের কমিউনিস্ট শাসন পলিটিকালি ফেইল করার পরে এবং চীনের ক্যাপিটালিস্ট ইকনোমি’তে জার্নি শুরু হইলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট’রা কেবলা হারায়া ঘর-ছাড়া গরু হয়া পড়ে…
পুরান ধারার কমিউনিস্টদের পলিটিকাল ক্যারিয়ার এই জায়গাতেই শেষ হয়, এরপরে তারা নানান ধরনের বাটপারির ভিতর দিয়া বাকশালের ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট হয়া উঠে, ইন্ডিয়ান এজেন্সির মেইন কোলাবরেট হওয়ার ভিতর দিয়াই রিলিভেন্ট থাকার ট্রাই করতে থাকে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে
৭. ১৯৯০’র দিক থিকাই পোস্ট-কলোনিয়াল থটের বেসিসে নতুন কমিউনিস্ট চিন্তার শুরু হইতে থাকলেও সেই ঘটনাগুলা পলিটিকালি খুব একটা ইনফ্লুন্সিয়াল ঘটনা হয়া উঠতে পারে নাই এখনো, পারে নাই দুইটা কারনেই – বাংলাদেশের কমিউনিস্ট রাজনীতি নিয়া নতুন কোন এনালাইসিস না করতে পারার কারনে, এবং একইসাথে কোন ফিউচারিস্টিক প্রপোজাল হাজির করতে না পারার কারনে; মানে, ডিফরেন্ট কোন পলিটিকাল পরস্তাব আসলে নাই উনাদের…
৮. এখন, বাংলাদেশের রাজনীতি’তে বাম-ঘরানার একটা কালচারাল লিগাসি আসলে থাইকা যাবে, নানান ফর্মেই, এর সব যে নেগেটিভ তা-ও না, বরং ব্যক্তিগত জীবনে সৎ, ভালো-মানুশ ও শিকখিত হইতে পারা – পজিটিভ traits-ই, যেইগুলা বাম-রাজনীতির এফেক্ট, কিনতু একইসাথে এর যে নেগেটিভ traits (যেমন, পিপলের বদলে আইডিওলজি বা ধারনাগুলারে পলিটিকসের সেন্টার কইরা তোলা…), সেইগুলা বদলাইতে পারার ভিতরেই মেবি বাংলাদেশের নতুন রাজনীতির কালচারাল বেইজটা তৈরি হইতে পারবে…
৯. নতুন কোন বিপ্লবি বা বামপন্থি রাজনীতি করা সম্ভব না বাংলাদেশে – তা না, কিনতু উনাদের হিস্ট্রিকাল রোলের কারনে সেইটা হওয়াটা টাফ হবে বইলাই আমি মনে করি… তার চে বরং নানান শিবিরে ভাগ হয়া যাওয়া নানান ধরনের বামপন্থিদের দেখা আমরা পাইতে পারবো, কিনতু একটা বাংলাদেশি বামপন্থি রাজনীতির পরস্তাব বা নিশানা কোনদিক থিকাই ভিজিবল না… অনেকে হয়তো এইটা মানতে রাজি হবেন না, কিনতু আই গেইস, এটাই বাস্তব!