spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদসাম্প্রতিকমুজিবের মূর্তি

লিখেছেন : আমান আবদুহু

মুজিবের মূর্তি

আমান আবদুহু

———- 

একটা মূর্তি বসানোর জন্য গরীব দেশের কি পরিমাণ টাকা নয়ছয় করা হইছে, চিন্তা করলে আসলে দুঃখই লাগে। 

শেখ মুজিব না কি আইনের স্বপ্নদ্রষ্টা!! প্রক্সি দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করা মুজিব না কি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে সমূদ্রসীমা সংক্রান্ত আইন প্রনয়ণের পাইওনিয়ার!! 

এই অজুহাত বানিয়ে, হাসিনার তথাকথিত সমুদ্রজয় উদযাপন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিছে। একটা রিসার্চ সেন্টার করতে এক মিলিয়ন ডলার সীড মানি দিতে হয়। গরীব দেশ বাংলাদেশ অষ্ট্রেলিয়াকে সেই টাকা দিয়েছে। ওশেন গভর্নেন্স রিসার্চ সেন্টার হইছে। সেই সেন্টারের উদ্যোগে মুজিবের মূর্তি বসানো হইছে। বিরাট সফলতা। আইনমন্ত্রী আনিসুল দলবল নিয়ে উড়ে এসেছিলো উদ্বোধন করতে।

আরো সমপরিমাণ টাকা নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে আওয়ামীরা। এরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গবেষক, সমাজসেবক। উচ্চশিক্ষিত সম্ভ্রান্ত বংশের এলিট লোকজন। পোগতিশীল। এরা সবাই চোর। 

তারপর গবেষণা হইছে কচু। মূর্তি বসানো শেষ। টাকা বন্ধ। তথাকথিত রিসার্চ সেন্টারও বন্ধ হয়ে বাতাসে উবে গেছে। মাঝখান দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরশাসক, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পাইওনিয়ার, সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার মাস্টারমাইন্ড এবং একদলীয় শাসনের প্রবক্তার মূর্তিটা রয়ে গেছিলো। ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ল’র ওয়েবসাইটে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেন্টারের ইতিহাস খুঁজে দেখেন, সব চোর বাটপারদের নাম পেয়ে যাবেন।

এটা সরানো সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র জুলাই বিপ্লবের কারণে। না হলে যে পরিমান টাকা ঢালা হয়েছে, এটা সরতো না। এটা বাংলাদেশও না যে গিয়ে ভাঙা যাবে। যদিও জিয়ারত করার সময় মন ভরে থুথু দিয়ে এসেছিলাম। মুততে পারিনি কারণ পাশে সিসি ক্যামেরা আছে। আর কিছুদিন থাকলে সেমিস্টার ব্রেকের নির্জন সময়ে গিয়ে ক্যামেরা ঢেকে দিয়ে মুতার একটা চিন্তা ছিলো। 

জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও বীররা আমাদেরকে আজীবনের জন্য ঋণী রেখে গেছে। ওরা আমাদেরকে মুক্তির সুযোগ করে দিয়েছে। জনগণের বিপুল আত্মত্যাগ, আওয়ামী লীগের গণহত্যা, পৃথিবীর মানুষের সামনে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে — ফ্যাসিবাদের গুরুর মূর্তি কিভাবো রাখো? মুসোলিনির মূর্তি রাখবা? 

ব্যাস। অস্ট্রেলিয়ায় মজু পকাৎ। 

সাত আট বছর যাবত বলতেছিলো, সরবে না। এখন চুপচাপ সরিয়ে নিয়েছে। 

আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ চাইলে সবই হয়। আমরা চাইতে পারি, যেইটা ভালো হয় সেইটাই যেন তিনি শেষ পর্যন্ত করেন। আর কৃতজ্ঞতা কিছু মানুষের প্রতি। সংশপ্তকের মতো। বছরের পর বছর নিরবে কাজ করে যান এই মানুষগুলো। কোন হতাশা নাই। কোন প্রাপ্তির জন্য, নামের জন্য দাবী নাই। আমি অবাক হই। তারপর নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। এদের কাছ থেকে শিখতে চেষ্টা করি।

মজুর মূর্তি আছে লন্ডনে, মিশিগানে, ওয়াশিংটন দূতাবাসে, তুরস্কে, আরো বেশ কিছু জায়গায়। সবগুলোকে সরাতে হবে।

প্রিয় বন্ধুরা, আজ ইফতার শেষে উদাত্ত গলায় স্লোগানে স্লোগানে, জিকিরে ফিকিরে দরদভরা মন নিয়ে কণ্ঠ মিলান — মুজিব ছিলো, মুজিব নাই / হইছে পকাৎ, *দির ভাই।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

আমিনুল ইসলাম on কবিতাগুচ্ছ
শিকদার মুহাম্মদ কিব্রিয়াহ on কবিতাগুচ্ছ
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ
নয়ন আহমেদ on মা দিবসের কবিতা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম on শিপা, আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড হতে পারিনি