spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদসাক্ষাৎকারতিরিশ এবং তিরিশোত্তর কবিতা আমার মননকে বিপুলভাবে ঋদ্ধ করেছে : মঈনুস সুলতান

সাক্ষাৎকার গ্রহণে : সাজ্জাদ বিপ্লব

তিরিশ এবং তিরিশোত্তর কবিতা আমার মননকে বিপুলভাবে ঋদ্ধ করেছে : মঈনুস সুলতান

১. আপনার প্রথম প্রকাশিত বই কোনটি? কবে প্রকাশিত হয়েছিলো? প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি কেমন ছিলো?

সত্তর দশকে আমার কয়েকটি ছোটগল্প লিটিল ম্যাগাজিনে ছেপেছিল। এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়ানোর কারণে এগুলোর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। তো আমার বন্ধু কবি আলমগীর রেজা চেীধুরী ওই গল্পগুলো দিয়ে ‘স্মৃতি পরিব্রাজক’ শিরোনামে একটি বই প্রকাশ করে সম্ভবত নব্বই দশকের শেষ দিকে। এ উপলক্ষে আমি লাওস থেকে অনেক বছর পর সপরিবারে একুশের বইমেলাতে আসি। মোড়ক উন্মোচন জাতীয় কোন অনুষ্ঠান হয়নি, তবে রেজার কল্যাণে অনেক বছর পর ফের দেখা হয়েছিল আরো দুজন বন্ধু কবি কামাল চৌধুরী ও কবি শাহজাদী আঞ্জুমান আরা মুক্তির সঙ্গে। উদ্দীপ্ত হয়ে বেশ রাতে আমি কথাশিল্পী মঈনুল আহসান সাবেরের তালাশে বেরোই, তার সন্ধান পাইনি, ঘুমন্ত শিশুকন্যা কাজরিকে কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি অজস্র বুকস্টলের গোলকধাঁধায়, দেখা হয়েছিল, কবি জাহিদ হায়দারের সঙ্গে, তিনি স্মীত হেসে বলেছিলেন, ‘মঈনুস, রাত হয়েছে, কাউকে পাবেন না, হোটেলে ফিরে যান।’

২. সাহিত্যে আপনি কার উত্তরাধিকার বহন করেন?

এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমার জানা নেই। তবে এ প্রসঙ্গে আমার যৎসামান্য ধারণা কিংবা অনুমান হচ্ছে, তিরিশ এবং তিরিশোত্তর কবিতা আমার মননকে বিপুলভাবে ঋদ্ধ করেছে। প্রমথ চৌধুরীর গদ্যও আমার বাক্য গঠনে সহায়তা করেছে। যাযাবরের ‘দৃষ্টিপাত’ এবং প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ বিরচিত ‘ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র’ প্রভৃতি বইপুস্তক আমাকে আগ্রহী করেছে ভ্রমণসহিত্যে। ভালো করে পড়তে শেখার আগে আমি পরিচিত হয়েছি সৈয়দ মুজতবা আলীর বেশ কিছু ভ্রমণ আলেখ্যের সাথে, কারণ ফুলবাড়ী গ্রামের যে বাড়িতে আমার শৈশব কাটে, ওখানকার পারিবারিক সংগ্রহে ছিলো শ্রদ্ধাভাজন সৈয়দ সাহেবের প্রায়–সবগুলো বই; এবং এক নিকটাত্মীয় কখনো তা সুন্দর উচ্চারণে পাঠ করতেন। উনার হিউমার নিয়েও পারিবারিক পরিসরে আমরা অনুভব করতাম বিমল আনন্দ। হয়তো এসব সাহিত্যপাঠ পরবর্তী জীবনে পথ চলতে পাথেয় যুগিয়ে থাকবে ।

৩. এ যাবৎ সর্ব মোট আপনার কতটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে? এর মধ্যে কোনটি বা কোন-কোন কাজকে বা কোন বইকে আপনি আপনার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি বলে মনে করেন?

আমার ধারণা, মোট আটাশ অথবা উনত্রিশটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে তথ্য সংগ্রহে আমি সব চেয়ে বেশী মানসিক শ্রম দিয়েছি ‘জিম্বাবুয়ে —বোবাপাথর সালানিনি’ এবং ‘ শত সন্ন্যাসী সহস্র মন্দির’ গ্রন্থে। দৈহিকভাবে আমাকে সবচেয়ে বেশি মেহনত করতে হয়েছিল  ‘রবার্ট ফ্রস্ট ট্রেইলের সোনালি পরাগ’ নামক হাইকিং এর অভিজ্ঞতা ভিত্তিক একটি ভ্রমণগ্রন্থ রচনায়। আমার কোন বই উল্লেখযোগ্য হওয়ার মতো মান অর্জন করেছে কিনা —আমি ঠিক জানি না।

৪. সম্প্রতি প্রকাশিত আপনার নতুন বই সম্পর্কে বলুন।

বছর দুয়েক আগে প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয়েছে,‘ ইথিওপিয়ার দানাকিল ডিপ্রেশনে ’ নামে অত্যন্ত দুর্গম লকেশনে ট্র‍্যাকিং করে আগ্নেয়গিরির প্রজলন্ত লাভা-সরোবরের পাড়ে নিশিযাপন নিয়ে লেখা একটি ভ্রমণ-পুস্তক। অন্য বইটি হচ্ছে, বাতিঘর থেকে প্রকাশিত ‘ফ্লোরিডায় আমেরিকার আদিবাসীদের মিউজিক মজমা’, ভ্রমণভিত্তিক এ উপাখ্যানে প্রতিবিম্বিত হয়েছে, নেটিভ আমেরিকান নামে পরিচিত আদিবাসী কৌমের সাংস্কৃতিক জীবনের খন্ড চিত্র।

৫. আপনি নিজেকে কোন দশকের কবি-লেখক বলেন? কেন?

আমি নিজেকে কোন দশকের সাথে যুক্ত হিসাবে ভাবি না। তবে সত্তর দশকে আমার লেখা বেশ কিছু ছোটগল্প ও সামান্য কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল লিটিল ম্যাগাজিনে। এ সূত্রে আমার নামের সঙ্গে সত্তর দশক শব্দ দুটি যুক্ত হতেও দেখেছি। এ সময়কালের পর দীর্ঘদিন আমার কোন লেখা স্বদেশে প্রকাশিত হয়নি। সুতরাং আমাকে সত্তর দশকের লেখক বা কবি বললে আপত্তিরও কিছু দেখি না।

৬. আপনার সমকাল নিয়ে বলুন।

আমার সমকাল বিষয়ক সচেতনতা তৈরী হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। যুদ্ধের পর পর বাঙালি হিসাবে দেহমনে যেমন অনুভব করেছি আত্মবিশ্বাস, তেমনি তার সমান্তরালে ছিলো যুগপৎ স্বজন হারানোর বেদনা ও স্বপ্নভঙ্গ। প্রতিবেশের তুমুল অস্থিরতাকে ধারন করে নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছি কবিতায়, কিছু সংঘাত-দীর্ণ অভিজ্ঞতা প্ররোচিত করেছে কয়েকটি ছোটগল্প রচনায়।

নয় এর দশকের মাঝামাঝি পরবাসে অ্যাকাডেমিকভাবে পরিচিত হয়েছি উত্তরাধুনিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে। কাজের সূত্রে সচেতন হয়েছি নারী-পুরুষের সমতা ও মানবাধিকার বিষয়ে, দিনযাপনে প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠেছে পরিবেশ সংরক্ষণ। ক্রমাগত পাড়ি দিয়েছি যে সময়কাল— তা অতীত হয়েছে দ্রুত নিজের অজান্তে, কিন্তু কখনো অমলিন হয়নি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি।

পথ চলতে গিয়ে যুক্ত হতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী তৎপরতায়। পেশাদারি কাজের জন্য নির্বাচন করেছি যে সব দেশ—যথা কেম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম কিংবা আফগানিস্তান; প্রতিটি দেশ ছিলো যুদ্ধবিধ্বস্ত, সিন্দাবাদের মতো যুদ্ধের দৈত্যকে কখনো ঘাড় থেকে নামাতে পারিনি; তবে এর সমান্তরালে পরিচিত হয়েছি হরেক দেশের পটভূমিতে রচিত দারুণ সব শৈলীতে রচিত কবিতার সঙ্গে। জ্যাজ, কটো কিংবা কোরা মিউজিকে উদ্দীপ্ত হয়েছি অহরহ, চিত্রকলাও চোখে বুলিয়েছে বর্ণের ভিজ্যুয়েল অঞ্জন। ক্রমাগত সরে গেছি চেনা সংস্কৃতির বলয় থেকে, তবে বহু দূর গিয়েও কদর করেছি— যে নিসর্গ-নীলিমা সৃজন করেছে আমাকে, এবং ফিরে তাকিয়েছি বার বার..।

৭. সাম্প্রতিক কালে কারা ভালো লিখছে বলে মনে করেন?

প্রচুর দ্বিধা নিয়ে এ প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে। দৃষ্টিসল্পতার জন্য আমি ইন্টারনেটে বেশীক্ষণ পড়াশোনা করতে পারি না। যেহেতু আমার পড়াশুনার পরিধি অত্যন্ত সংকীর্ণ, সুতরাং কারা ভালো লিখছেন— এ ব্যাপারে মতমত দিতে আমি সম্পূর্ণ অপারগ।

ইদানিং গদ্যপাঠ করার মতো দৈহিক সক্ষমতা আমার নেই ,তবে সীমাবদ্ধতার ভেতর কিছু কবিতা আমার ভালো লেগেছে। গভীর আগ্রহ নিয়ে এ সব কবিতার প্রকরণ, ভাবসম্পদ, বাকপ্রতিমা ও প্রবাহমানতা পর্যবেক্ষণ করেছি। এ ভালো লাগার তালিকায় আছেন— কবি ফেরদৌস নাহার, কবি জাফর আহমেদ রাশেদ, কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ, কবি ফারহানা রহমান, কবি পিয়াস মজিদ, কবি জিননু রাইন কবি মোস্তাক আহমাদ দীন, কবি মুজিব ইরম ও কবি মোহম্মদ ইমদাদ প্রমুখ।

৮. কত দিন আপনার প্রবাস জীবন? কোথায় আছেন? কি করছেন? পারিবারিক পরিচিতি জানতে চাই।

প্রায় তেত্রিশ বছরের প্রবাস জীবন। রুটি-রুজির ধান্দায় এবং ভ্রমণের অসিলায় বেশ কতগুলো দেশে দিন কাটিয়েছি। প্যানডেমিকের আমলে সাময়িকভাবে বসবাস করতে শুরু করি যুক্তরাষ্ট্রে। আমি চোখে খুব কম দেখি, এ দৈহিক সীমাবদ্ধতার জন্য বছর কয়েক হলো— পেশাদারি কোন কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত নই। তবে মূলত স্বেচ্চাসেবক হিসাবে ভিন দেশ থেকে আগত অভিবাসী উদ্বাস্তুদের সহায়তা করি; এবং মাঝেমধ্যে  আন্তর্জাতিক পরিসরে শরণার্থী সমস্যা সংক্রান্ত কাজে পরামর্শক হিসাবেও শামিল হই। পারিবারিক জীবনে আমি হলেণ গ্রীন নামে এক যুগের এক নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে সংসার করছি। আমাদের কন্যা কাজরি সুলতান ফটোগ্রাফী ও ফ্যাশন ডিজাইনে আগ্রহী।

৯. প্রবাস জীবনে সাহিত্যচর্চায় প্রতিবন্ধকতা বা সুবিধা কি-কি? কোথায়?

প্রাক-ইন্টারনেটের যুগে স্বদেশের লিটিল ম্যাগাজিন ও পত্রিকার সাহিত্যপাতার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা দুঃসাধ্য ছিলো। পরবর্তীতে আইটি ‘র কল্যাণে এ সমস্যার বহুলাংশে সমাধান হলেও আমি যে সব রিমোট দেশে যথা মোজাম্বিক, মেসিডোনিয়া কিংবা আফগানিস্তানে কাজ করেছি, ওই সব লোকেশনে মাতৃভাষায় বইপত্র সংগ্রহ সম্ভব ছিলো না। এ সংকট আমার জীবনে আজ অব্দি জারি আছে। সহমর্মী কবি ও শিল্পীদের সঙ্গে আমি আড্ডা দিতে ভালোবাসি, দূরত্বের কারণে সেটাও ঘটছে না। উপরন্তু ম্যাসেঞ্জার ও ইমেইল নির্ভর যোগাযোগে মাঝেমধ্যেই তৈরী হয় ভুল বোঝাবুঝি, আমার ধারণা, সামনা সামনি বসে কথাবার্তা বলার সুযোগ থাকলে এ ব্যাপারটা এড়ানো যেত।

 পরবাসের সাহিত্যচর্চার ইতিবাচক দিকগুলো হচ্ছে— ভিন দেশের কবি-সাহিত্যিক ও শিল্পীদেরদের সঙ্গে সহবত, হরেক দেশের নানাবিধ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শরীক হওয়া, ক্ষেত্রবিশেষে — যেমন যুক্তরাষ্ট্রের রিসার্চ লাইব্রেরীগুলোতে বিরল বইপত্রের সন্ধান লাভ।

১০. আপনি কখনো কি কোন পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিন অথবা সংকলন সম্পাদনা করেছেন? বিস্তারিত বলুন।

 সম্ভবত ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সালের দিকে, মৌলবীবাজার শহর থেকে ‘বারুদ’ নামে কবিতা-ভিত্তিক একটি লিটিল ম্যাগাজিন আমি সস্পাদনা করেছিলাম। ওই যুগে ডিক্লারেশন ছাড়া ছোট কাগজের পর পর অনেকগুলো সংখ্যা প্রকাশে আইনি সমস্যা ছিলো। তো ভিন্ন নাম তথা  ‘সাইমুম’‘বিক্ষোভ’ নামে আরো দু-বার লেখাজোখা সংগ্রহ করে, তাবৎ কিছু গুছিয়ে প্রেসেও দিয়েছিলাম, কিন্তু ছাপা হতে না হতে আমি শহর ছাড়তে বাধ্য হই এবং ওইগুলির বিলিবন্টনেরও বন্দোবস্থ করতে ব্যর্থ হই।

১১. লিটল ম্যাগাজিন এর সংজ্ঞা কি? এ নিয়ে আপনার ভাবনা বলুন।

  সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করার মতো তাত্ত্বিক জ্ঞান আমার নেই। তবে নব্বই দশকের প্রথম দিকে স্বদেশ ছাড়ার আগ অব্দি— কখনো প্রায়-নিয়মিত লিটিল ম্যাগাজিনে লিখেছি। সে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমার আন্ডারস্টেন্ডিং শেয়ার করছি। কোন কোন  লিটিল ম্যাগাজিনকে  মূলধারার পত্রপত্রিকার বিপরীত স্রোতে পাল তুলতে যেমন দেখেছি, তেমনি কোন কোন লিটিল ম্যাগাজিন মূলধারার সমান্তরালে প্রকাশিত হয়েও ভাব ও প্রকরণের দিক থেকে স্বাতন্ত্র বজায় রেখেছে। নীরিক্ষাধর্মী এবং অপ্রচল ধারার বিষয়বস্তু নিয়ে গল্প কিংবা কবিতা প্রকাশের শোভণ মাধ্যম ছিলো লিটিল ম্যাগাজিন। অল্প পরিচিত কিংবা বয়সে তরুণ এবং লেখাজোখার জগতে সম্পূর্ণ অপরিচিত লেখক কিংবা কবিদের সাহিত্যের অঙ্গনে প্রবেশের চাবিকাঠি ছিলো লিটিল ম্যাগাজিন। দীর্ঘদিন ধরে আমি লিটিল ম্যাগাজিনের জগৎ থেকে দূরে আছি, এ নিয়ে আমার স্মৃতিকাতরতা প্রবল, তবে সাম্প্রতিককালের লিটিল ম্যাগাজিন সম্পর্কে সাক্ষাৎ অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ক্ষীণ।

১২. আগামী দিনের সাহিত্য কেমন হবে? আপনার কল্পনায়। 

 ইনফরমেশন টেকনোলজি অথবা আর্টিফিসিয়েল ইনটিলিজেন্স— যে নামেই ডাকুন না কেন, এর প্রভাব বলয় যেমন দিন-কে-দিন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি সাহিত্যের রূপকাঠামো, বিষয়বস্তু ও প্রকাশ মাধ্যম প্রভৃতি ব্যাপকভাবে বিবর্তিত হবে। এ ব্যাপারটা অবধারিত ধরে নিয়েও আমি কল্পনা করতে ভালোবাসি যে, ডিজিটাল প্রকাশ প্রক্রিয়ার সমান্তরালে ছাপাখানা-ভিত্তিক গ্রন্থ প্রকাশের ধারাটি ক্ষীণতোয়া হয়েও বেঁচে থাকবে কিছুদিন। তবে বৈশিষ্ঠ বদলে যাবে, যেমন ক্যামেরার আবির্ভাবের পরও বাস্তবে প্রতিভাত হয় যে রূপচ্ছায়া তা অতিক্রম করে চিত্রকলা হয়ে ওঠেছে বিমূর্ত; হরেক আঙ্গিকে শুধু প্রকাশিতও হয়নি, বিকশিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত, এ ধারাপ্রবাহে যুক্ত হচ্ছে নবতর মাত্রাও, ঠিক তেমনি ভাবে কাগজে ছাপা বইপত্রও ভিন্ন আঙ্গিকে বহাল রাখবে অস্তিত্ত্ব।

 মাঝেমধ্যে আমি কল্পনা করি যে, ভাষাভিত্তিক সীমান্ত অতিক্রম করে গড়ে ওঠছে সহজবোধ্য প্রতীক ও সংকেত নির্ভর এমন এক যোগাযোগ মাধ্যম,যাতে আলাস্কার ইগলুতে বসবাসরত ইনুইট সম্প্রদায়ের কোন কবি অতি সহজে বাতচিত করতে পারবেন তিব্বতী গুম্ফার দেয়ালে অংঙ্কনরত চিত্রশিল্পীর সঙ্গে।

আর ঘটনাক্রমে আমি বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকলে, জলতলে প্রবালের বাগিচায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞা নিয়ে লিখত পারবো ভ্রমণ-পুস্তক, এমনি কী দেখা-সাক্ষাৎও হতে পারে এমন কোন লেখকের সঙ্গে, যার রচনার বিষয়বস্তু পৃথিবী নয়— মহাকাশে ভাসমান ফিরোজা রঙের একটি গ্রহ।

 সাক্ষাৎকার গ্রহণে : সাজ্জাদ বিপ্লব 

 অক্টোবর ২০, ২০২৩

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

নয়ন আহমেদ on ১০ টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ
আমিনুল ইসলাম on কবিতাগুচ্ছ
শিকদার মুহাম্মদ কিব্রিয়াহ on কবিতাগুচ্ছ
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ