spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদপ্রবন্ধচিরশিল্পের দেশে চলে গেলেন জাহিদুল হক

লিখেছেন কাজী জহিরুল ইসলাম

চিরশিল্পের দেশে চলে গেলেন জাহিদুল হক

কাজী জহিরুল ইসলাম

ডিসেম্বরের ৫ তারিখে জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে এক ঘন্টা ফোনে কথা হয়। কবি জাহিদুল হকের জীবনে কত মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে তা অনেকেই জানেন না। জানেন না এজন্য যে তিনি এইসব কথা কখনো লিখেননি। আমাদের শেষ আলাপচারিতায় আমি বলি, জাহিদ ভাই, এগুলো আপনি লিখছেন না কেন? জাহিদ ভাই বলেন, হ্যাঁ  লিখবো, লিখবো। আমি জানি তার লেখা হবে না। গদ্য লেখার বেলায় তিনি খুবই অলস। তার সর্বশেষ প্রকাশিত কবিতার বই ‘মিকেলাঞ্জেলো ও অন্যান্য সনেট’ এর ভূমিকা লিখতে দুবছর লেগেছে, সেই লোক নিজের জীবনের মজার ঘটনাগুলো গদ্যে খুব দ্রুতই লিখে ফেলবেন তা আমি অন্তত বিশ্বাস করিনি। আমি বরং তাকে বলি, আপনার লিখতে হবে না, আপনি আমাকে বলেন, আমি লিখবো। তিনি বলেন, সেটাই বরং ভালো। তখন তিনি বলতে শুরু করেন। শোনো, সোফিয়া লরেনের সঙ্গে সারাদিন তার ইতালির এপার্টমেন্টে কাটানোর গল্প তো তোমাকে বলেছি, এবার আরো একজন বিখ্যাত মানুষের সঙ্গে আমার সময় কাটানোর গল্প শোনো। জাহিদ ভাইয়ের খুব ইউরোপ প্রীতি, এ-নিয়ে তাকে আমরা কম খোঁচাইনি, ধরেই নিয়েছি এবারও হয়ত কোনো ইউরোপীয় বিখ্যাত কবির সঙ্গে তার আড্ডার কথা বলবেন। কিন্তু না, তিনি প্রাচ্যের বিখ্যাত শহর কলকাতার গল্প বলতে শুরু করলেন।

আমি কিন্তু কলকাতায় খুব একটা যাইনি, মাত্র দুবার গিয়েছি। দ্বিতীয়বার যখন যাই তখন একদিন কফি হাউসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সঙ্গে ছিলেন সৌমিত্র চট্টপাধ্যায় এবং অপর্ণা সেন। অপর্ণা আমাকে বলেন, আপনাকে তো আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না। আমি বলি, না দেখেননি, আমি কলকাতায় আর মাত্র একবার এসেছি। আসলে কলকাতার প্রতি আমার কোনো মোহ নেই। শুধু দুজন মানুষের টানে দুবার এসেছি। অপর্ণা তখন খুব উৎসুক এবং আহত হলেন। তিনি বলেন, কলকাতা হচ্ছে ব্রিটিশ ভারতের ইন্টেলেকচুয়াল হাব, কত শত বিখ্যাত মানুষ এখানে জন্মেছে, থেকেছে, আর আপনি মাত্র দুজন মানুষের আকর্ষণে এখানে এসেছেন! কোন সে দুজন সৌভাগ্যবান বা সৌভাগ্যবতী, নাম জানতে পারি কি? 

অবশ্যই জানতে পারেন। তাদের একজন বুদ্ধদেব বসু, যার সঙ্গে দেখা হবার আর কোনো সুযোগ নেই, অন্যজন সুচিত্রা সেন। আমার খুব ইচ্ছে এবার তার সঙ্গে দেখা করার। এরপর আমরা অনেকক্ষণ আড্ডা দেই, উঠবার মুহূর্তে সৌমিত্র দা বলেন, জাহিদ, সুচিত্রা তো আজকাল কারো সঙ্গে দেখা করেন না, নীরবে নিভৃতে একলার জীবন যাপন করছেন। আমি একজনের ফোন নাম্বার দিই, যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।

আমি খুব মন দিয়ে জাহিদ ভাইয়ের গল্প শুনি। এরপর তিনি সেই নাম্বারে ফোন করলে এক ভদ্রলোক ধরেন। তিনি, সুচিত্রা সেনের যিনি দেখাশোনা করেন, একজন বয়স্ক বাজার সরকার টাইপের লোক, তার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেন। ভদ্রলোকের নামটা জাহিদ ভাই বলেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গেছি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন দিদি কারো সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন না, আর সাংবাদিক টাইপের কারো সঙ্গে তো নয়ই। জাহিদ ভাই এবার সুর পাল্টান, বলেন, আপনি বলবেন আমি একজন কবি, বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুধু তার সঙ্গে দেখা করতে, আমি দিদিকে আমার বইটা দিয়েই চলে যাবো, এক মিনিটও বসবো না। বাজার সরকার বলেন, হবে না। তিনি কারো সঙ্গেই দেখা করবেন না। জাহিদ ভাই, আবারও বলেন, ঠিক আছে, আপনি অন্তত দিদিকে আমার কথাটা বলুন, ‘না’ টা তার মুখ থেকেই আসুক। পরদিন জাহিদ ভাইয়ের হোটেলে ফোন করে সেই ভদ্রলোক জানান, দিদিকে আপনার কথা বলেছি, তিনি আমার ওপর ক্ষেপে গেছেন।

জাহিদ ভাই বলেন, তখন আমি খুব আহত এবং আশাহত হই। আমার প্রিয় নায়িকাকে এক নজর দেখতে পাবো না?। আমার টাকাও ফুরিয়ে আসছে। সেই হোটেল ছেড়ে দিয়ে একটি সস্তার হোটেলে উঠি। কলকাতার হোটেলগুলোর তখন একটা নিয়ম ছিল, কেউ অন্য হোটেলে ট্রান্সফার হলে নতুন হোটেলের ঠিকানা, রুম নাম্বার আগের হোটেলকে জানাতে হত। আমি তাই করি। পরদিন আমার নতুন হোটেলে সেই ভদ্রলোক ছুটে আসেন। আমি তখন বাইরে ছিলাম, তিনি অনেকক্ষণ আমার জন্য অপেক্ষা করেন। তখন তো আর মোবাইল ফোনের যুগ ছিল না, চাইলেই কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যেত না। আমি ফিরে এলে তিনি আমার ওপর ভীষণ ক্ষেপে যান। আপনি যে হোটেল বদলেছেন, আমাকে জানাবেন না মশাই। তখনই তিনি সুখবরটা দেন। সকালে নাশতার টেবিলে বসে দিদি হঠাৎ বলছেন, হ্যাঁরে তোর বাংলাদেশের সেই লোকটাকে কাল বিকেলে আসতে বলিস তো। আপনি খুব সৌভাগ্যবান মশাই, দিদির দেখা পেয়ে যাবেন। আমি তখন বলি, কখন যাবো?

ঠিক পাঁচটায়। দিদি কিন্তু সময়ের ব্যাপারে খুব সচেতন। এক মিনিটও যেন দেরী না হয়।

আমি ঠিক পাঁচটায়ই চলে আসবো। ঠিকানাটা বলুন, আমি লিখে নিচ্ছি।

ঠিকানা লাগবে না মশাই। হোটেল থেকে বেরিয়ে একটা ট্যাক্সি নেবেন, বলবেন সুচিত্রা সেনের বাড়িতে যাব।

পাঁচটা বাজার পাঁচ মিনিট আগেই আমি পৌছে যাই। গিয়ে পাঁচ মিনিট গেটেই বাইরে অপেক্ষা করি। ড্রয়িংরুমে আমি বসে আছি। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আসেন। আমি নিজের নাম বলে তার হাতে আমার বইটা দিই। এরপর বলি, দিদি, অনুমতি দিলে আমার জীবনের একটা ঘটনা আপনাকে শোনাতে চাই, দুমিনিটের বেশি লাগবে না, এটা বলেই আমি চলে যাবো। তিনি ঘাড় নেড়ে সম্মতি দিলেন। 

আমি আপনার সব সিনেমাই দেখেছি। হারানো সুর দেখতে গিয়ে একটা বিপদে পড়েছিলাম। আমি তখন স্কুলে পড়ি। মা জানতেন আমি আপনার খুব ভক্ত। হারানো সুর তখন আমাদের সিনেমা হলে এসেছে। সন্ধ্যায় পড়ার টেবিল থেকে পালিয়ে সিনেমা দেখতে চলে যাই। রাতে ফিরে এসে যখন খেতে বসেছি, মা আমার ভাতের প্লেট টেনে নিয়ে যান। বলেন, সুচিত্রা সেনকে গিয়ে বল ভাত দিতে। 

একথা শুনে তিনি হাসতে শুরু করেন। তার সেই বিখ্যাত হাসি। এরপর বলেন, সুচিত্রা সেন তোমাকে ভাত খাওয়াবে, তুমি খেয়ে যাবে। এরপর অনেকক্ষণ গল্প করি। বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চেয়েছেন। মাঝে মাঝেই তিনি উঠে যাচ্ছিলেন, বুঝতে পারছিলাম রান্নাঘরের তদারকি করতেই উঠছিলেন। ফিরে এসেই, জিজ্ঞেস করতেন, মা কি বললো, আবার বলো তো। বেশ কয়েকবার তিনি এই ঘটনাটি জানতে চাইলেন এবং প্রতিবার আমার কথা শুনে হাসতে শুরু করলেন।

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই খবর পাই আমাদের প্রিয় জাহিদ ভাই আর নেই। অনেকেই ফেইসবুকে তার ছবিসহ মৃত্যুসংবাদ পোস্ট করেছেন। লেখক, অনুবাদক এবং আমলা, আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ লিয়াকত খান ইনবক্সে তার মৃত্যুসংবাদ এবং তার সম্পর্কে কিছু তথ্য পাঠান। 

জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার কবে, কখন প্রথম দেখা হয়েছিল মনে নেই, তবে কোভিডের সময় আমরা খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠি। প্রতিদিন জাহিদ ভাই আমাদের সঙ্গে “কফি ও কবিতা” ভার্চুয়াল আড্ডায় যোগ দিতেন। ভালো করে তার মুখ দেখা যেত না। জাহিদ ভাই ঢুকলেই আমি বলতাম, এই যে অন্ধকারের প্রাণী এসেছে। জাহিদ ভাই হাসতেন। একদিন এই অন্ধকারের কারণ জানান, বলেন, আমার এক আত্মীয়া অসুস্থ, আমি এখন সাভারের একটি হাসপাতালে। এরপর একদিন জানতে চাই কে সেই আত্মীয়া? জাহিদ ভাইয়ের বয়স সত্তরের ওপরে, রাত জেগে রোগীর সেবা করার জন্য এটি উপযুক্ত বয়স নয়। সেই নারীর কি আর কোনো আত্মীয় স্বজন নেই? একদিন জানতে চাই, জাহিদ ভাই কে তিনি? তিনি বলেন, তোমাকে পরে বলবো। এরপর একদিন বলেন, আমার স্ত্রী। 

আমি অবাক হই, স্ত্রী! জাহিদ ভাই তো চিরকুমার। কবে বিয়ে করলেন? মাহবুব হাসানকে বলি, জাহিদ ভাই কি বিয়ে করেছেন? মাহবুব বলেন, না তো। আমাকে যে বললেন, হাসপাতালে তার স্ত্রীর সেবা করছেন। মাহবুব বলেন, হয়ত আপনার সঙ্গে ফান করেছেন। আমি মনে মনে ভাবি এমন একটা বিষয় নিয়ে কেউ ফান করে। এরপর তার স্ত্রীর নাম জানতে চাই, তিনি বলেন, তোমাকে পরে বলবো। আমি অনুমান করি কিছু একটা ঝামেলা আছে।

গত অক্টোবরে যখন ঢাকায় যাই, কবিতা ক্যাফেতে আমাকে নিয়ে যে অনুষ্ঠানটি হলো, সেটির তারিখ জাহিদ ভাই জোর করেই বৃহস্পতিবার ২৬ অক্টোবর করতে বলেন। তিনি বলেন, আমাকে উত্তরবঙ্গে যেতে হবে, আমার স্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী, পুরো আয়োজনটা আমাকে দেখাশুনা করতে হচ্ছে, অন্যদিকে তোমার অনুষ্ঠানেও আমি থাকতে চাই, তুমি প্লিজ শুক্রবারে না করে বৃহস্পতিবারেই করো।

ঢাকার বনশ্রীর ই ব্লকে জাহিদ ভাই তার পৈত্রিক জমিতে বাড়ি করেছেন। আমিও ঢাকায় গেলে আমার ছোটো ভাই বিটনের ফ্ল্যাটে, বনশ্রীতেই উঠি। পাশাপাশি থাকার কারণে প্রতিদিনই আমাদের দেখা হয়। সকালে একসঙ্গে চা-পরোটা খাই সান্দ্রা রেস্টুরেন্টে আর আড্ডা দিই। ই এবং এফ ব্লকের অ্যাভিনিউটিকে আমি বলতে শুরু করি পোয়েটস অ্যাভেনিউ, মূলত এই অ্যাভিনিউর ওপরেই জাহিদুল হকের বাড়ি, তার কারণেই আমি বলি এটির নাম পোয়েটস অ্যাভেনিউ। একদিন চেপে ধরলে তার বিয়ের ঘটনাটি বলেন। তার স্ত্রীর নাম রেবেকা সুলতানা, বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী।

আমি চিরকুমারই ছিলাম। ভদ্রমহিলা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার পাশে থাকা খুব দরকার। অবিবাহিত একজন পুরুষ পাশে থেকে সেবা করবে এটা তো বাংলাদেশের সমাজ মেনে নেবে না। তার বদনাম হবে। জানতাম তিনি হয়ত মাস ছয়েক আছেন। তখন তার পাশে থেকে সেবা করার জন্য আমরা বিয়ে করি। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি মারা যান। 

জাহিদ ভাই আমেরিকায় আসতে চেয়েছিলেন। স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নতুন বছরের শুরুতেই। ঠিক এর কয়েকদিন আগেই আমাকে ফোন করে বলেন, ইনভাইটেশন লেটারটা পাঠিয়ে দাও, আমি ভিসার জন্য এপ্লাই করে দিই। আমি বলি, আগে সিদ্ধান্ত নিন আসবেন কিনা। আপনাকে ভিসা দেবেই। ভিসার জন্য হাজার বিশেক টাকা খরচ হবে, যদি সিদ্ধান্ত নেন আসবেন তবেই ভিসা নিন। ইনভাইটেশন আমি যে কোনো মুহূর্তে পাঠিয়ে দিতে পারব।

কে কখন কোন দেশে পৌঁছে যায় কে জানে। জাহিদ ভাই এখন এমন এক দেশের ভিসা পেয়েছেন, প্লেনে উঠেছেন, পৌছেও গেছেন, যেখান থেকে আর কখনো ফিরে আসতে হয় না এবং সেখানে আমরা সকলেই যাবো একদিন। হয়ত ওটাই আমাদের দেশ, এখানে বেড়াতে এসেছিলাম। 

সুবীর নন্দীর গাওয়া “আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়/ তবু কেন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়” তার লেখা অসম্ভব জনপ্রিয় একটি গান। এটি ছাড়াও তিনি আরো অনেক জনপ্রিয় গানের রচয়িতা। যেমন: কথা দাও কথাগুলো ফেরত নেবে না, স্বাধীনতা তুমি আমার বাড়িতে এসো, যে দেশে বাতাস স্মৃতির স্পর্শে ভারী, কত দিন পরে দেখা ভালো আছো তো ইত্যাদি। গীতিকার হিসেবেই মূলত জাহিদুল হক বিখ্যাত। যদিও তার বেশ কিছু সুখপাঠ্য ও পাঠক নন্দিত কবিতাও রয়েছে। 

বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও তিনি সাংবাদিকতা করেছেন ডয়েচে ভ্যালিতে, দৈনিক সংবাদ পত্রিকায়। বিটিভিতে অনেক দিন ধরেই “চিরশিল্পের বাড়ি” নামে একটি অনুষ্ঠান করছিলেন। আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন বলেন, তুমি থাকতে থাকতে যদি রেকর্ডিংয়ের শিডিউল পড়ে তাহলে এবার তোমাকে গেস্ট হিসেবে আমন্ত্রণ জানাবো। 

জাহিদ ভাইয়ের কাছে অভিজ্ঞতার এক সোনার খনি ছিল। আর কিছুদিন সময় পেলে হয়ত আরো কিছু বের করে আনতে পারতাম। এই আফসোসটা থেকেই গেল। 

জাহিদ ভাইয়ের শিল্পরুচী খুব উঁচু পর্যায়ের ছিল এটা আমি সব সময় টের পেয়েছি। আমাদের শিল্পাঙ্গনের নোংরামী তিনি পছন্দ করতেন না কিন্তু একজন সজ্জন ভদ্রলোক হবার কারণে নীরবে কষ্ট পেতেন, কাউকে কিছু বলতেনও না। জাহিদ ভাইয়ের আত্মা চিরশান্তিতে এক শিল্পের বাগানে ঘুরে বেড়াক, উড়ে বেড়াক এই প্রার্থনা করি।

১৪ জানুয়ারি, ২০২৪। ম্যানহাটন, নিউইয়র্ক

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ