spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাদেশপ্রেমের ১০ কবিতা : মহিবুর রহিম

দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : মহিবুর রহিম

সূর্যকরোজ্জ্বল

খুলে দেখলে দেখতে পাবে ভেতরে আমার
সমগ্রটাই সূর্যকরোজ্জ্বল
তার পাশে আছে এক বিস্তীর্ণ সবুজ দ্রাঘিমা
পানি ও প্রাণের স্বচ্ছল মাখামাখি
পাখি ও প্রকৃতির সমৃদ্ধ বসবাস
দেখতে পাবে অনন্তের মতো বিস্তৃত ভেতরে আমার

যদিও জন্মমাত্র সংশয় ও অন্ধতের অভিশাপ আমাকে আক্রান্ত করে
মিথ্যার বলয়ে আমাকে পরানো হয় শ্মশানের কাফন ও ক্ষুধার যন্ত্রণা
আমার ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল অহংকার
বাতাসের ঝাপটায় একটা কাগজের ঘুড্ডি যেন তছনছ করা হয়
কিন্তু লাশ ও রক্তের অঙ্কুর কি কখনো দমানো যায়?

দুর্মর কিছু নয়, জীবনের মৃত্যুই আমার সুপেয় আরক
ক্রমান্বয়ে মৃত্যু শিক্ষা অভিজ্ঞতা আমাকে মৃত্যুশীল করে
আমার স্বপ্ন পানি ও প্রকৃতি সঞ্চারে অনিঃশেষ প্রাণ পেয়ে যায়
মাটি ও মৃত্তিকা কি অদ্ভূত সঞ্জীবিত জীবন হয়ে ওঠে

খুলে দেখলে দেখতে পাবে ভেতরে আমার
সমগ্রটাই অপরাজেয়
আকাশের মিনারের মতো মতো উঁচু আমার সীমানা
দেখতে পাবে, আমাকে পরাজিত করা
এতটা সহজ না।

রূপকথার গল্প না

শস্যভরা মাঠের হৃদয়ে
আমাদের স্বপ্নময় গ্রাম। সেই পানির দেশ ভাটি অঞ্চলে
গাছপালার মমতায় ঋদ্ধ আমাদের বাড়ি
আমি লেজ উঁচিয়ে থাকা এক দোয়েল পাখির ছানা
ঝড়-ঝাপটা অভাব দারিদ্র্যের মধ্যে
আমার বেড়ে ওঠা
আবাদি জমিনগুলো আমার মায়ের স্নেহের আঁচল
নিষ্কলুষ ফসলের জন্য আমাদের চৌদ্দপুরুষের সংগ্রাম।
আব্বা ছিলেন উত্তরাধিকারী এক যোদ্ধা
সম্মান ও শস্যের জন্যে সামান্য আপোষ ছিল না জানা।

শৈশবে আমার জীবন ছিল শকুন ও চিলের বিপদে বিপন্ন
একাত্তরে বাংলাদেশের নীল আসমান শত্রæর শ্যেন দৃষ্টিতে ছেয়ে গেলে
আমি দেখেছি মুক্ত স্বদেশের জন্যে আব্বার যুদ্ধে যাওয়া
সমূহ সর্বনাশের মধ্যে
আম্মার শক্ত ডানার নির্ভয় প্রতিরক্ষা
দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের পারাপার করতো আমাদের পাতাম নৌকা
আমি সে নৌকার উড়াল দেওয়া পালগুলো গুনতাম
ক্ষুধার্ত বিপন্ন হলেও যুদ্ধের ঘটনাবলী আমাদের
হৃদয় ভরে দিতো। আমি তো দেখেছি সাহসের কাছে পরাজিত
শত্রুর যন্ত্রণা। আমাদের সংগ্রামী জীবন

কোন রূপকথার গল্প না

মধ্যরাতের জঙ্গলবাড়ি

কিশোরগঞ্জ থেকে জঙ্গলবাড়ি
চাঁদের আলোয় ঘেরা ধোয়াশার পথ
হাঁটতে হাঁটতে ভারি হয়ে আসে
উৎসাহের সবটুকু সুখ
শিশিরের বিনত মিনতি লুটিয়ে পড়ে
অক্লান্ত রাস্তায়।

মধ্যরাতে জঙ্গলবাড়িতে পৌঁছে দেখি
প্রকৃতিকে ক্ষত-বিক্ষত করছে
নিশীথের নৃশংস ছুরি
গভীর নিঃস্তব্ধতায় ঝরছে
ইতিহাসের করুণ সাদা রক্ত
আর আামদের পদধ্বনিকে পরিহাস করছে
অযতেœ লালিত কোন কুহেলি কুহক।

শুধু এক নিঃশঙ্ক চেতনা
মসনদে আলা ঈশা খাঁর
স্মৃতিবিজড়িত এই জঙ্গলবাড়ির হিম কুয়াশায়
আমাদের হাতে তুলে দেয়
অপরাজেয় ইতিহাসের দায়
যেন আজ আমাদের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে
চন্দ্রিমার শাদা ঘোড়া
আর গভীর নিঃস্তব্ধতায় বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা

এক করুণ কাহিনী ঘেরা পুঁথির পৃষ্ঠায়
আদিগন্ত জ্যোৎস্নার উৎসবে
যেন আমরাও সারিবদ্ধ ভাটির শার্দুল
আামাদের হাতে হাতে
সেই দুঃসাহসী জীবনচেতনা

ক্রমাগত এগিয়ে চলা

এইখানে যারা বসতি গড়েছিলো
সেই সব পরিশ্রমী শাশ্বত হৃদয় মানুষেরা
অসম্ভব জেদী আর অন্যায়ে সতত সংক্ষুব্ধ
লড়াকু জীবন যোদ্ধা

ইতিহাসের কদর্য পৃষ্ঠাগুলো ছিন্ন ভিন্ন করে
যারা এগিয়ে এসেছিলো নদীদের পথ ধরে
অনুর্বর ভাটির প্রান্তর তাদের দিয়েছিলো বুক উজার করে
তারা গড়েছিলো সোনার বসতি

স্বপ্ন আর বাতাসের দীঘল প্রান্তরে
যেখানে কথা বলতো শস্যের অমিত সম্ভাবনা
যেখানে কথা বলতো আকাশের বিচিত্র ধারণা
নদী শস্য আর আগামীর উত্তরাধিকার
এইসব চিরন্তন প্রেরণা

এইখানে যারা বসতি গড়েছিলো
সেই সব সহজ সরল সংগ্রামী মানুষেরা
তারা যেন জন্মগত ভাবেই নিয়ে আসে
লড়াই করার অভিজ্ঞতা
আর প্রনিয়ত জীবন থেকে, জীবনের-
বঞ্চনা ও বিবাদ থেকে
তারা খুঁজে নেয় প্রত্যাশিত বিদ্রোহী চেতনা
শ্রমে-ঘামে উৎপাদিত
নিষ‹ুলুষ শস্যের জন্যে তাদের লড়াই
একরকম ওয়ারিশ সূত্রেই পাওয়া

পলাশীর পরাজয় থেকে আর
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে
নিঃস্ব থেকে নিঃস্ব তরো হতে হতে
মাটিতেই তারা খুঁজে পেয়েছিল আত্মপরিচয়

আর এই নদী ছিল তাদের জন্যে এক উড়ন্ত পতাকা
তারা ধমনীতে বহন করতো উত্তাল ঢেউয়ের চেতনা
সারিবদ্ধ লাঙ্গলের ফলায় ফলায়
জমিনের ধূসর পৃষ্ঠায় লেখা হতো ফসলের ফরমান

যতটুকু জানি, তারা কখনোই আপোষ করতো না
বাতাসের শো শো শব্দের মতোই বেজে উঠতো
তাদের সম্মিলিত পদচারণা
অফুরন্ত প্রান্তরের আহ্বানের মতোই ছিলো
তাদের জীবন বাসনা

পরস্পর
সংলগ্ন
সম্মিলিত
যুথবদ্ধ হয়ে
যুগ ও শতাব্দী পার হয়ে
ক্রমাগত

তাদের এগিয়ে চলা।

পিতাকে উৎসর্গিত

তুমি যেনো রৌদ্রকেও ব্যবচ্ছেদ করে
শস্যবীজের সাথে বুনে দিয়েছিলে স্বপ্নের বাগানে
একদা সেখানে উদ্ভাসিত হয়েছিলো এক নীলবর্ণ ফুল

হয়তো কেউ বিশ্বাসই করতো না
একটা ফুল একটা জীবন দর্শনের প্রচ্ছদ হতে পারে
যখন যুগের পর যুগ ভেসে যেতো বেওয়ারিশ বাতাসে

হয়তো কেউ বিশ্বাসই করতো না
প্রখর রৌদ্রও হতে পারে কোন ভবিষ্যত সম্ভাবনা
বাতাসও হতে পারে, উত্তরাধিকারীর সাহসী পতাকা

যারা জানে না তারা ফিরে এসেছিলো ঘরে
তারা মিথ্যা গল্প বুনেছিল সন্ধ্যার আঁধারে
বাস্তবতার ধুলোবালি থেকে
তুমি তৈরি করেছিলে একটা সড়ক

যেখানে দাঁড়িয়ে পাঠ করা যেতো অকৃত্রিম প্রকৃতিকে
আকাশের সমান বিশাল এক পাঠ্যসূচি থেকে
গ্রহণ বর্জন আত্মস্থকরণ

হয়তো কেউ বিশ্বাসই করতো না
একটা তরঙ্গক্ষুব্ধ নদী থেকে যে বিপুল শব্দরাজি উত্থিত হতো
নিষ্কলুষ সবুজের সমারোহ থেকে নিষ্কাশিত হতো যে মনন

আর দূর দ্রষ্টব্যের আহ্বান থেকে ধ্বনিত হতো অনন্তের গান
তুমি ছিলে প্রাণবন্ত এক শিক্ষার্থী সমান
তাই বুক ভরে রেখেছিলে রৌদ্রের প্রতিধ্বনি

আর চোখে ধরে রেখেছিলে চিরকালের আরক্তিম জীবনের মোহ…

সংগ্রামী বীর

চিরকালের সংগ্রামী বীর বাংলাদেশের চাষী
ফসল তোলা শ্রমের মতো দেশকে ভালবাসি
মাটির সাথে বুক মিলিয়ে স্বপ্ন বুনে যাই
দুর্যোগ বা দুর্দিনেও কোন দুঃখ নাই।

আমার জন্যে একই অর্থ পলাশী-কারবালা
জগতশেঠ ও উর্মিচাঁদ ঝরায় লোভের লালা
মীরজাফর আর ঘসেটিদের বিষের ছোবল নিয়ে
দুইশ বছর গেল আমার মাটিকে আগলিয়ে।

চিরকালের বঞ্চিতদের প্রতিচ্ছবি আমি
আমিই তিতু-রজব আলি বিপ্লবী সংগ্রামী
নীল বাবুদের বুটের নিচে পিষ্ট হতে হতে
ভাগ্য আমার লেপ্টে আছে দুঃখ জরার ক্ষতে।

হার মানিনি তবু ঘৃণ্য বেনিয়াদের কাছে
রুগ্ন করুণ দেহে আজও লড়ার শক্তি আছে
জানতো না তা পাক সেনারা জানল একাত্তরে
প্রতি ইঞ্চি মাটির জন্যে দূর্গ ঘরে ঘরে।

ধান সমাজের শ্রমজীবী চিরকালের বীর
প্রতি ঘরে জন্মি, হয়ে হাজার তিতুমীর
মরি না কেউ শহিদ হয়ে অমর হয়ে বাঁচি
রক্ত দিয়ে ভিজায় মাটি- তবু আগলে রাখি

আমার পতাকা

কল্প কথার আল্পনা নয় জীবন ধরেছি বাজি
বাঁচার জন্যে নির্ভিক মনে শহীদ হতেও রাজি
মারণান্ত্রের শীতলবাটে এঁেকছি প্রেমের ফুল
ছাব্বিশে মার্চ মুক্তির নদী তরঙ্গ সংকুল

ভাইয়ের বোনের রক্তে এঁকেছি আল্পনা তার বুকে
একাত্তরের তীব্রতম জীবন জয়ের সুখে
রক্তে লিখেছি আমার জাতির দ্বীপ্ত ইতিহাস
আমার পতাকা মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন ও বিশ্বাস

সবুজ শ্যামল গাঢ় জমিনে বিজয়ের উৎসব
অসীম আকাশে উড্ডীন তার সাহসের কলরব
আমার পতাকা চির অক্ষয় উজ্জ্বল অফুরান
আদি প্রাকৃত জনতার বুকে মুক্তির জয়গান।।

স্বাধীনতা তুমি বহু সাধনার

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি পলাশীর ময়দানে
রুখে দাঁড়ানো মীর কাসিমের সাহসী জীবন দানে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি বাঁশের কেল­া গড়ে
সেই তিতুমীর আজও জাগ্রত এদেশের ঘরে ঘরে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি সিপাহী বিপ্লব থেকে
যার ইতিহাস রাখা যায় না কোন ষড়যন্ত্রে ঢেকে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি শরীয়তুল­ার কাছে
তারই রেখাপাত কোটি মানুষের চেতনায় জেগে আছে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি ক্ষুধা ও মন্বন্তরে
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে হাহাকার ঘরে ঘরে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি বহু ঘাত-প্রতিঘাতে
ডিভাইড এন্ড রোল দাঙ্গার আগুন স্বজনের লাশ হাতে

স্বাধীনতা যার মূল্য বুঝেছি ভাষা শহিদের নামে
একাত্তরের জীবনজয়ী মুক্তির সংগ্রামে

স্বাধীনতা তুমি বহু সাধনার করুণার দান নও
স্বাধীনতা তুমি নির্ভয় সেই জীবনের কথা কও।

তিরিশ বছর পর
(কবি সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুক কে নিবেদিত)

বিবেক আমাকে সব সময় সাবধান হতে তাগাদা দিতো
‘ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না
ভয় তোমাকে কোথাও পৌছাতে দেবে না’
কিন্তু আজন্ম এক ভয়ের ভীতি আমি কাটিয়ে উঠতে পারিনি।

অথচ আজ বন্ধুরা আমাকে এক সমর্থ সিংহের মুখোমুখি
বসিয়ে কোথায় যে পালিয়ে গেলো!
যে আমি পলায়নকামী শৃগাল দেখে ভয়ে তটস্থ থাকি
আর কোন সজারু যখন আমাকে তার অহমিকা
দেখাতে কাঁটার পেখম মেলে ধরে
আমার একদম সহ্য হয় না, বরং
আমি তার উৎকট গন্ধের ভয়ে পালাতেই ব্যস্ত থাকি!

এই সেদিনও মধ্যরাতে তিনটি সংঘবদ্ধ কুকুরের ভয়ে
রাস্তায় পরনের কাপড় ফেলে
আমি ঢুকে পড়েছিলাম এক বেদেনীর ডেরায়
আঠার বছরের এক যুবতী বেদেনী তার অর্ধেক শাড়িতে
আমার ভয় ঢেকে দিয়েছিলো!

শৈশবে আমার ভয়কাতুরে ভাবটা মা’র চোখ এড়ায়নি
মা আমার ভয় ভাঙাতে কতো চেষ্টাই না করেছেন
ন্যাংটা পাগলের মাজারের তাবিজ এনেছেন
খোয়াজ খিজিরের আছর লাগা নদী ভাঙনের ঘোলাপানি
খেতে দিয়েছেন।
আর প্রতি মঙ্গলবারে খালি পেটে খেয়েছি চাল ভেজানো পানি
অথচ আমার ভয়কাতুরে স্বভাবটা কিছুতেই যায়নি

মা আমাকে বলতেন : শোন-
যেদিন এদেশে যুদ্ধ শুরু হয়, তুই তখন দশ মাসের পেটে
তোর বাবা যুদ্ধে যাবার প্রস্তুতি শেষ করে উঠানে দাঁড়িয়ে
রাইফেলে ফাঁকাগুলি ছুঁড়ল
আমি ভয় পেয়ে কেঁপে উঠলাম, তার কিছুক্ষণ পরেই তোর
জন্ম হয়। তোকে কোলে নিয়েও আামর ভয়ের কাঁপন শেষ হয়নি
তোর মধ্যেও বুঝি সেই ভয়টা রয়ে গেল!
হয়তো মায়ের কথাই ঠিক।

নয় মাসের যুদ্ধে আমার ঘটমান মনন ও শরীরে
যে ভয় বাসা বেঁধেছে তা কিছুতেই হয়তো দূরীভূত হবার নয়।

কিন্তু আজ মধ্যে ডিসেম্বরে সতীর্থ বন্ধুরা আমাকে
কম্পমান কেশরের এই সিংহের মুখোমুখি
বসিয়ে কোথায় যে পালিয়ে গেলো !
অথচ আজ আমি নির্ভীক, আমার মধ্যে ভয়ের উদ্রেকও নেই
সিংহের দাঁত, নখ ও থাবায় দেখতে পাচ্ছি পূর্ণ সামর্থ্য
কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি না
যেন আজ আমি রোমান এম্পায়ারের এক নির্ভীক বন্দী
খাঁচার ভেতর রক্ত লোলুপ সিংহের মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছি

আর মনে হচ্ছে তিরিশ বছর পর
আমার পুরুষত্বে ঘটেছে অভ্যুত্থান
এ যেন আমার অন্তর্সত্তায় স্বাধীনতার পূর্ণ অধিষ্ঠান।

বপন

সম্ভাবনার উত্তরাধিকারী চাষি আমি
চেতনার বীজ রুয়ে গড়ে তুলেছি নার্সারি
প্রতিদিন বপন করে যাচ্ছি স্বপ্ন প্রেম মনুষ্যত্ব
বপন করে যাচ্ছি দুর্মর স্বাধীন চেতনা

নিশ্চিত এখানে দ্রোহি চোখে গজিয়ে উঠবে চারা
পানির বদলে তাই প্রতি বীজে ঢেলে যাচ্ছি রক্তরস
প্রতিদিন এখানে অদম্য সাহসে বেড়ে উঠবে গাছ
একদিন বটবৃক্ষ হবে আমার স্বপ্ন

সম্ভাবনার উত্তরাধিকারী চাষি আমি
শিল্পের লাঙ্গলে চাষ করি চেতনার জমি
আশার ফসল পেতে বিশ্বাসের বীজ বপন করেছি
জীবন স্বপ্নের যতো জৈবসার ছিটিয়ে দিয়েছি

উত্তরাধিকার

রক্তের নদীতে জীবন্ত রয়ে চলেছে উত্তরাধিকার
পাল তুলে গান গেয়ে বয়ে চলেছে যুগ-যুগান্ত অবধি
আমিও অক্ষম নই, বহুকাল আছি এই স্রোতধারার সাথে
উত্তাল তরঙ্গ ভেঙে হেইও হেইও ধ্বনি তুলে
নদী ও সমুদ্রের বুকে দিগ্বিজয়ী চেতনার বিশাল বহরে।

যারা আমাকে নিঃসঙ্গ ভাবে, তারা জানে না কী সেই উত্তরাধিকার
তারা জানে না রক্তকে সঞ্চালিত কোটি কোটি প্রতিশ্র“তির ভার
তারা জানে না আমার ভেতরে জীবন্ত সহস্র নদী নৌবহর সপ্তডিঙা
আমার ভেতরে জীবনজয়ী আশ্চর্য ঐতিহ্যের সমাহার।

যারা জানে আমার সত্তা এক প্রাচীন পুরাকীর্তির দুর্লঙ্ঘ্য দুর্গ
যারা অটল অনড় অবস্থানে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়
আধিপত্য স্বৈরাচার এমনকি রণজয়ী আলেকজাণ্ডার
কাঁধে নিয়ে ফিরে যায় ব্যর্থতার অমানিশা আর হাহাকার

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা