spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগদ্যশুরুর কথা

লিখেছেন : সাজ্জাদ বিপ্লব

শুরুর কথা


সাজ্জাদ বিপ্লব
……
পড়তে-পড়তেই একদিন লেখার শুরু। ছোটবেলায় পড়তাম, সচিত্র “নবারুণ”। একটু বড় হলে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন এর বাংলা প্রকাশনা “উদয়ন”। গ্রাহক হওয়ার সুবাদে যা বাসায় পেতাম নিয়মিত।
রুশদেশের উপকথা, কত কি! সেই যে কল্পনার রাজ্যে প্রবেশ ও ঘোরলাগা, আজো মনে হয় সেই ঘোরেই ছুটে চলছি…

পরে কি করে যে সিরিয়াস সাহিত্যে প্রবেশ, খুঁজতে গেলেই ধাঁ-ধাঁ লাগে।

পরিবারে, একভাই, লিয়াকত হোসেন রোকন, কবিতা লিখতেন। একসময় পাণ্ডুলিপিও পাঠিয়েছিলেন আমার কাছে, প্রকাশের জন্য। আমার-ই অবহেলায় বা অসতর্কতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। তিনিও সংসারের চাপে ও টানে সংসারী হয়েছেন। সফল হয়েছেন ব্যক্তিজীবনে। কিন্তু হারিয়ে গেছেন, সাহিত্য নামক অলীক এক মায়াপথ থেকে। অন্যান্য অনেকের মতো।

হয়তো ভালোই হয়েছে। হয়তো হয়নি।

এবার নিজের কথায় আসা যাক।
বিয়ের সময় অর্থাৎ এনগেজমেন্টের পর হবু বধুকে সরাসরি জানালাম, আমি লেখালেখি করি।
[এতো বছর (২৭) পর সেই বউয়ের আফসোস : “আগে বুঝিনি! লেখালেখি মানে এমন…!!” ]
তার উক্তি ও উপলব্ধি : এর চেয়ে অন্যান্য নেশাখোর, তারাও ভালো, নেশা কেটে গেলে সংসারী হয়, সংসারে মনযোগ দেয়। আয়-উন্নতি করে। কিন্তু আমার মতো লেখক (?) বা কবি (!!) তাদের চেয়েও অধম। অযোগ্য। না আছে খ্যাতি (?) না আছে প্রচার (?) আর না আছে প্রকাশনা থেকে কোন রোজগার।
তবু, কিসের নেশায়? কিসের-ই বা আশায় পড়ে আছি? লিখে যাচ্ছি? নিজেদের উদ্যোগে বই ও পত্রিকা করছি?

আল্লাহ মালুম!!!

তখন উত্তাল তরঙ্গে ভাসছি।
আমার ব্যবসা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান “পার্বণ” এ প্রতিদিন চলছে তুমুল আড্ডা। কে আসেননি বা আসছেন না সেখানে?

সমগ্র বগুড়া, শুধু বগুড়া না, সারা বাংলাদেশ জড়ো হচ্ছে তখন, আমাদের অর্থাৎ আমাদের পত্রিকা : পংক্তি, লিমেরিক, বিকেল, স্বল্পদৈর্ঘ্য, দরুদ, বিদ্রোহ, নেমেসিস, সুহৃদ, উদ্যান ইত্যাদি কেন্দ্রিক।

নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন : ফারুক সিদ্দিকী, ডা. রহমতুল বারী, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, রেজাউল করিম চৌধুরী, জি এম হারুণ, আজিজ সৈয়দ, ফখরুল আহসান, জয়ন্ত দেব, খৈয়াম কাদের, পান্না করিম, প্রতীক ইজাজ, পিয়াল খন্দকার, আমীর খসরু স্বপন, অমিত রেজা চৌধুরী, ইসলাম রফিক, প্রতীক নজরুল, সৈকত ইসলাম, তৌফিক জহুর, নুরুল ইসলাম খান, মামুন রশীদ, এমরান কবির, অনন্ত সুজন, মাহমুদ শাওন, মাসুদ কামাল, রহমান তাওহীদ প্রমুখ উঠতি ও প্রবীণ কবিবৃন্দ ও সাহিত্যপ্রেমীগণ।
সারাদেশ থেকে লেখা ও চিঠিপত্র পাঠাচ্ছেন, বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক। গড়ে উঠছে মেলবন্ধন।

লিটলম্যাগাজিন আন্দোলন তখন একচেটিয়া তথাকথিত বাম্পন্থি প্রগতিশীলদের দখলে।
সৈয়দ আলী আহসান, আল মাহমুদ, ফজল শাহাবুদ্দীন; দেশসেরা এসব কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীগণ কোনঠাসা। বইমেলা বা শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট তথা বিজু’র পাঠক সমাবেশ, কোথাও ঠাঁই নাই, ভিন্ন মতাবলম্বী কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের।

এ অবস্থায় সাহিত্যে প্রবেশ করেই দেখি, আল মাহমুদকে “দিকভ্রষ্ট” বলে অসাহিত্যিক আক্রমণ করা হয়েছে, ৮ বছর আগে (১৯৯০ সালে) বগুড়ার একটি সাহিত্য(?) পত্রিকায়। আমিও ৮ বছর পর (১৯৯৮) লিখে ফেললাম দাঁতভাঙা জবাব : লক্ষ্যভেদী আল মাহমুদ ও তার কবিতা। বললাম, শুধু ৮ বছর পর কেন? ৮ শ’ বছর পর হলেও অন্যায় আচরণের, লেখার জবাব দেওয়া হবে। কোন ছাড় নেই!

ব্যাস, সেই যে শুরু, চলছি আজো, লিখে যাচ্ছি গদ্য ও পদ্য, সমানতালে। হয়তো লিখে যাবো আরো, চলবো এভাবেই আমৃত্যু, ইনশাআল্লাহ…

আরও পড়তে পারেন

2 COMMENTS

  1. আল মাহমুদ কবিদের কবি। কবিকে যারা অসম্মানিত করে তারা নিজেরাই অসম্মানিত হয়। লেখাটা ভালো লাগলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ