কাউকাব সাদী
ডানে প্রকাশিত আমার দ্বিতীয় কবিতার বই “মাধ্যাকর্ষণের সহজ ভূমিকায়”র প্রচ্ছদ। সাথে আমার প্রথম কাব্যকে ব্রিজ করে দিলাম। নতুন বই বিষয়ে ক’টা কথা বলা জরুরি ভাবি। কবিতায় আমার অবস্থান “ক্লাসিস্ট” । এ দাবির সাথে যারা আমার প্রথম কাজের ( রন্ধ্রে রন্ধ্রে করি সঞ্চালন) ন্যায্যতা খুঁজে পাবেন তারাই আমার দ্বিতীয় কাজ তথা ‘মাধ্যাকর্ষণের সহজ ভূমিকায়’ হড়কাতে পারেন। কিন্তু আমি একই অবস্থানে আছি। বাকিটা পরিবর্তিত সময়ের ব্যবধান নির্দিষ্ট করবে। অথবা করবে না। নিশ্চিত নই। মানবিক মর্মঘাতকে অবধারিতভাবে লোকজ, লোকায়ত ও রীতিসিদ্ধ করার যে তোড়জোড়, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এ বই হতে পারে তার ডিসক্লেমার— আপাতত এটুক বলার।
আমার কবিতার দীর্ঘ ও অন্তর্গত পাঠ আছে যাদের, পাশাপাশি আমার বর্তমানের কবিতায় মনোযোগী এমন জনাকয়েক–তাদের সহ– বই সবার জন্যেই উন্মুক্ত।
বই থেকে ৫ টা কবিতা রইলো:
*
এক সুসংগঠিত দলের যদি একশো’ সদস্য
তাতে দল ছেড়ে পালাতে চান দু’জন
এবং আরো একজন একই দলের ও দয়িতার
দায় কামড়ে আমরণ পড়ে থাকলেও
বাকি সাতানব্বইয়ের চক্ষুর রক্ত উপেক্ষা করেন:
উপরে লিখিত দুজনকে পালাতে বাতলে দেন পথ
আমি সে আমরণ সেই একজনের ভক্ত
(দয়িতা)
*
যেমতে আনন্দ হাসি
ব্যথা ও বেদনা—বিরহ ভালোবাসা হয়
প্রেম হয় কাতরতা বিঁধে
হিংসাও একই ক্ষোভ রাগ দ্রোহ
সমস্ত লোভ নিয়েই মানবিক বোধ
তাই আমি পুষি যেভাবে পোষো হৃদয়
সাথে নিয়ে অহেতু মূল্য
মনোমানবিকতার ক্যারিকেচার
নারীদেহের অতিশায়িত ভুবনে
ক্লিষ্ট হয়ে চুপ;
বড়ো বড়ো লোকের নীতিশ্রেণির সংঘাতে
পারবো না বনানী-বোধকে আর
প্রাণে-প্রকৃতিতে ফোটাতে…
(মনোমানবিকতার ক্যারিকেচার)
*
তুমি আমাকে শ্যামলিমার কথা অনেক বলেছো
আমার মাটির উর্বরতা
বলেছো কতো সহজে দানামুক্তি পায় চারা
জানি আমি এই পলির স্নিগ্ধতা
ধূলিধূসরিত পাতার ক্লান্তি
চেটিয়া হইচই উষর গ্রীষ্ম
আরো সব ঘাম কাম ক্লিষ্ট খোঁয়াড়ের মহাবার্তা
কিন্তু আমি আর না
বন্ধু আমি চলে যাবো
তোমার দেহাভিযোজিত সেই মাঠে
মেরু অঞ্চলের নিকটবর্তী ফ্লেভারে
রেড ম্যাপল আর ওকের জঙ্গলে
তোমার বিষণ্ণতা আর স্মৃতিকাতরতার
ভূমিতে ক্লান্তি বিছিয়ে পড়ে থাকবো হাজারো দিন
হাত-পা— সমস্ত বুক ছুড়ে
তিনশত মাইলের ত্রিসীমানাতেও
আমাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না…
(চেটিয়া হইচই উষর গ্রীষ্ম)
*
চোখের সমক্ষে থাকো যদি—থালার
আদলে দেখি সূর্য। দূরে গেলে বিধেয়।
হরিৎ দৃশ্যের থেকে সরে বসে
সম্পূরকতার ছবি: পরাগের কেন্দ্রাতিগ
ঊনলোকি পষ্ট হলো! ফিরে কে?
যায় রোষে—এহেন হীনতায়
থিতু হতে চেয়ে আত্মপর বেগে
তরুণী নয় কিশোরীও নয়
শুয়োরের বাচ্চা মহিলার দল
নিঃশেষিত করে গেলো একটা ল্যান্ডস্কেপকে
(কেন্দ্রাতিগ)
*
কেনো তোমাদের টাকাগুলো সেদিনই—মানে আমরা যেদিন ধার চাই, সকাল সকাল একটা জরুরি কাজে ফুরিয়ে যায়? কেনো সেগুলো দুদিন আগে ফুরায় না? কিংবা না ফুরালো। থাকলো তোমাদেরই। আমরা চাওয়ার পরেও
(মার্জিন অব ইউটিলিটি )
……………………………………………………………………………………………………………………
মাধ্যাকর্ষণের সহজ ভূমিকায় (কবিতা)
প্রকাশক: বৈভব
সম্ভাব্য প্রকাশ: জানুয়ারি, ২০২৪
প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত
…….
বিশেষ কৃতজ্ঞতা পাপিয়া জেরীনকে