spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদলিটল ম্যাগাজিনতাইরান : লিটল ম্যাগাজিন মিছিলে নতুন সংযুক্তি

লিখেছেন : তাজ ইসলাম

তাইরান : লিটল ম্যাগাজিন মিছিলে নতুন সংযুক্তি


তাজ ইসলাম

বাংলাদেশ ও বাংলা সাহিত্যের দীর্ঘ মিছিলে যুক্ত হল আরও একটি লিটলম্যাগ। ‘তাইরান’ নামে তার আত্মপ্রকাশ। একটি সার্থক মানসম্পন্ন লিটলম্যাগের সকল শর্ত পূরণ করতে যেন তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নামটা কিছুটা অপ্রচলিত। যেকোন ভাষায় বিদেশী শব্দের প্রবেশ সে দেশের সে ভাষাকে সমৃদ্ধ করে। স্বতঃস্ফূর্ত প্রবেশই ভাষাকে গতিশীল ও সমৃদ্ধ করে। অপ্রচলিত শব্দ হলে একটু বেখাপ্পা লাগে। তবে প্রয়োগে প্রয়োগে তা সাবলীল হয়ে যায়। ‘তাইরান’ অবশ্য পরিভাষায় প্রচলিত। সাহিত্যিক স্বভাবে আনকোরা। ‘তাইরান আবাবীল’ শব্দ যুগলে ‘আবাবীল’ বহুল পরিচিত। তাইরান’ও এখন ক্রমশঃ পরিচিত হয়ে উঠবে বলেই মনে করি। তাইরানের সূচনা সংখ্যা সম্ভ্রান্ত লেখকদের শ্রেষ্ঠ লেখার সমন্বয়পত্র। যাত্রা তার জয় করার সংকল্প নিয়ে। শুরু হয়েছে কবিতা বিষয়ক গদ্য দিয়ে। কবিতা বিষয়ক নিজস্ব চিন্তার কথামালা প্রকাশ করেছেন স্বনামে পরিচিত কবি, সাহিত্যিক,সাংবাদিক,সম্পাদক,কলামিস্ট মুজতাহিদ ফারুকী।

“কবিতায় এমন কিছু থাকতে হবে যা নতুন,যা পাঠকের অভিজ্ঞতার বাইরের, যা তাকে চমকে দেবে,অভিভূত করবে,ভাবনা উস্কে দেবে,দিলখুশ করবে। একটি কবিতা এতসব শর্ত ঠিকঠাক পূরণ/ পরিপালন করলেই বলা যেতে পারে, এটি সব দিক থেকে রসোত্তীর্ণ কবিতা হলো। (মুজতাহিদ ফারুকী)”
মুজতাহিদ ফারুকীকে পরিচিত করানো হয়েছে তিনি সাংবাদিক,সম্পাদক,কলামিস্ট হিসেবে। তবে পাঠকের কাছে তার আরও একটি জনপ্রিয় পরিচিতি তিনি কবি। প্রাজ্ঞ ও বয়োজ্যেষ্ঠ কবি। বয়স ও পাঠের বিজ্ঞতায় তিনি হয়েছেন অভিজ্ঞ।
কবিতা লিখতে লিখতে, কবিতার পথে হাঁটতে হাঁটতে চিহ্নিত করেছেন সার্থক কবিতা,সফল কবিতার অবয়ব। ” কবিতা নিয়ে চকিত ভাবনা” সেসবের স্বল্পদৈর্ঘ বয়ান।

‘তাইরান’ একটি লিটলম্যাগ। লিটলম্যাগ হল শিল্প সাহিত্যের মুখপত্র। কবিতা শিল্পের আদি শাখা। সম্ভবত সেই বিবেচনায় কবিতা বিষয়ক লেখাটিকেই তাইরানের প্রারম্ভিক লেখা হিসেবে পত্রস্থ করা হয়েছে। আমরা মুজতাহিদ ফারুকীর কবিজ্ঞানকেই প্রাধাণ্য দিই। কবি বয়ান করেছেন নিজের উপলব্ধির কথা। কথায় কথায় বলেছেন রসোত্তীর্ণ কবিতার কথা। উপরের বক্তব্যটুকু সেই বয়ানের অংশ বিশেষ। বিস্তারিত বিবরণ আছে প্রবন্ধের ভিতরে। এই সংখ্যার প্রবন্ধকার হলেন ৫ জন। মুস্তাফীজ শিহাব তার প্রবন্ধে বলেন, ” সুতরাং বিড়ালতপস্বী না সেজে ভারতকে নিজের চেহারার দিকেই তাকাতে হবে,….অন্যথায় পার্শ্ববর্তী যে কোনো রাষ্ট্রে এর ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সেই পরিণতি দিল্লিকেই বহন করতে হবে।” কি পরিণতি,কোন দায় ভারতের কাঁধে, আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়াদি জ্ঞাত হওয়ার জন্য পাঠ জরুরি তাইরানে প্রকাশিত ” আফগান উগ্রবাদ : বিল্লি- তপস্যায় দিল্লি” শীর্ষক প্রবন্ধখানা। গ্রামীণ রেনেসাঁর অন্যতম পুরোধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন কাঙাল হরিণাথ মজুমদারকে প্রাবন্ধিক আব্দুল মান্নান ফকির। আতিক হেলাল তার প্রবন্ধে মহাকবি ইকবালকে হাজির করেছেন অন্য এক ইকবাল রূপে। সৈকত দে লিখেছেন টিনটিন বিষয়ক প্রবন্ধ। বিস্তারিত বলার সুযোগ কম। সংক্ষেপিত বক্তব্য হল সবগুলো প্রবন্ধই সুখপাঠ্য।

“দারাশিকোহ তেমনই এক উল্লেখযোগ্য মুঘল, যার সম্রাট হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি তা হতে পারেননি। বরং তিনি হয়েছেন মুঘল ইতিহাসে একজন ট্র্যাজিক হিরো।” ঘটনা বলা শুরু করেছেন এভাবেই। তারপর বিস্তারিত। দারাশিকোহ সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠপুত্র। গবেষক ও সাহিত্যিক এমদাদুল হক চৌধুরী সরল শব্দে বলেছেন ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায়ের কথা। করুণ এ কাহিনীতে বর্ণিত হয়েছে মুঘল সম্রাট শাহজাহান পুত্রদের আত্মকলহ ও ভ্রাতৃকলহের কথা। এই কলহে শাহজাহানপুত্র দারাশিকোহ হন ট্র্যাজিক হিরো। সিংহাসনের জন্য সহোদরদের সাথে করতে হয় যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত নিজের প্রাণ দিয়ে ইতিহাসে নাম লেখান ব্যর্থ শাহজাদা হিসেবে।

শুধু গল্প কবিতা,ছড়া,উপন্যাসই সাহিত্য না। ইতিহাসের ঘটনা,ঘটনার নায়ক-খলনায়কদের বিবরণও বর্ণনা গুণে হয়ে ওঠে রসোত্তীর্ণ রচনা। তাইরানের ইতিহাস অংশের রচনাগুলোও এমন সরস রচনার স্বীকৃতি পাবে বলেই মনে হয়। এমদাদুল হক চৌধুরী লিখেছেন মুঘল ইতিহাসের একটি অংশের খণ্ডিত ইতিহাস। সুসাহিত্যিক,অনুবাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু লিখেছেন অযোধ্যার এক মহিয়সী নারীর কথা। নারী সাধারণত হয় ভীরু,ভীত,অবলা। কিন্তু বর্ণিত নারী একজন বীর ও বিদ্রোহী নারী। বৃটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা এক সাহসী নারী। নাম তার হযরত মহল। যিনি ছিলেন নওয়াব ওয়াজিদ আলী শাহের প্রিয় রাণীদের একজন।

” ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে ১৮৫৬ সালে অযোধ্যাকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করে এবং নওয়াব ওয়াজিদ আলী শাহকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”
বৃটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করে সিপাহীরা। ইতিহাসে যা সিপাহী বিদ্রোহ নামে পরিচিত। “বিদ্রোহের আকার দেওয়ার জন্যে প্রয়োজন ছিল একজন নেতার এবং এক্ষেত্রে বেগম হযরত মহল তার সুযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।”

বেগম হযরত মহল সেসময় বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন, তাদের উৎসাহিত করেন, সংঘটিত করেন এবং যুদ্ধ পরিচালনা করেন। বেগম হযরত মহলের নেতৃত্ব গঠিত হয় স্বাধীন সরকার। তারা বৃটিশ বাহিনীকে পরাস্ত করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাদের রণ কৌশলে বৃটিশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। অবশ্য শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী বৃটিশ বাহিনীর সাথে চূড়ান্ত যুদ্ধে পরাজয় অনিবার্য হয়ে উঠলে তিনি পিছু হটেন। কিন্তু আত্মসমর্পণ করেননি। আপোষহীন এই বীরনারী শেষ জীবন নির্বাসনে কাটিয়েই ইন্তেকাল করেন। ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল এই অধ্যায়টি অনেকেরই অজানা। অজানাকে জানিয়ে দেয়াই সাহিত্যিকের কাজ। তাইরান ও তার লেখকবর্গ সেই দায়িত্ব নিয়েই যেন এগিয়ে চলছেন সামনের দিকে।

” মানিকগঞ্জ থেকেই আসছে,তবে প্রাপক কুতবুর রহমান; আর চিঠিটা বেয়ারিং।” একটি সংলাপ আর একটি বাক্যে লুকিয়ে আছে একটি হারানো অতীত। ডিজিটাল এই সময়ে হারিয়ে গেছে অনেককিছুই । হারানো চিঠি, চিঠি আদান প্রদান পদ্ধতি আজ সবই অতীত,এখন ইতিহাস এবং তা ঐতিহ্যের অংশ।
যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল চিঠি। হলুদ খামের সে চিঠি এখন কেবলই অতীত। বেয়ারিং চিঠি চিঠি প্রেরণের একটি পদ্ধতি। তরুণ সমাজের অনেকেই হয়তো জানেই না চিঠির সেই অধ্যায়ের কথা।

গল্পকার মুস্তফা কামাল আক্তার তার ছোটগল্প ” বেয়ারিং চিঠি “তে প্রেম বিরহ, ভালোবাসা, সংসার, অভাব, মানবিক গুণ বর্ণনার ছলে পাঠককে ফিরিয়ে নিয়েছেন সুদূর অতীতে। এভাবেই একজন গল্পকার নিজের মুন্সিয়ানার স্বাক্ষর রাখেন নিজের গল্পে।

আ. ন. ম আইনুল্লাহ পারভেজ তার গল্পে হাজির করেছেন একাত্তরকে। একাত্তর এদেশের ইতিহাসের অংশ, স্বাধীনতার সোপান; স্বপ্ন,সংগ্রাম,বেঁচে থাকা, ভালোবাসা সংগ্রাম ও সফলতার নাম। গল্পকারের গল্পের উপজীব্য তাই একাত্তর। গল্পের নাম ” একাত্তরের অসমাপ্ত গল্প “।

” রাতের অন্ধকার খান খান করে ফুটলো বোমা।… বাতাসে সাইরেনের শব্দ। ভারী বুটের আওয়াজ।… সামনে মানুষের চিৎকার, গুলির শব্দ, ভারী বুটের আওয়াজ। ” যুদ্ধ দিনের চিত্রতো এমনই। এসবের ভিতর দিয়েই চলে জীবন। সে জীবনের বার্তা নিয়েই ” আর্মির কনভয় জিপ” এর ফাঁক গলে হেঁটে চলছেন আশরাফ চৌধুরী। সুরাইয়া, মুমু এই গল্পের অন্য চরিত্র। তাদের সাথে আছে ইরফান।” দরজা আটকানোর শব্দ আর একই সাথে গুলির আওয়াজ চেতন হলো ইরফানের।”

শুভ্র সরকার কবি ও কথাসাহিত্যিক। তাইরান ছেপেছে তার কথাসাহিত্য। কবি গল্পকার হলে তার গল্পেও থাকে কাব্যময়তা। তার” জোসনার ধারণা” গল্পে আছে কবিতার মতো উপমা। ” যেন জামার শেষ বোতামটা খুলতে বাকি তখনও। যেন শীত — অন্ধকারে তাড়াহুড়োয় গিঁট পড়ে যাওয়া শায়ার দড়ি। আবার হতে পারে সে মুখে বরফ নিয়ে কথা বলা জাদুকরের প্রেমে পড়েছে। ” শুভ্র সরকার তারপর শব্দের জাদুতে টেনে নিয়েছেন নিজের গল্প। গল্প লিখেছেন এ সময়ের মেধাবী, কথাসাহিত্যে প্রতিনিধিত্বশীল একঝাঁক গল্পকার। জাকির তালুকদার, ফিরোজ আহমদ, শিল্পী নাজনীন, মোস্তফা অভি, শত্তুর মিত্তির, রঞ্জিত চৌবে, ফারাহ আজাদ দোলনের গল্পে সজ্জিত ” তাইরান”র গল্প বিভাগ। নজরুল মোহাম্মদ রচিত “চুড়িভাঙা দাগ” কাব্য নাটক পাঠকের জন্য ভিন্ন রুচির কাব্য উপাদান।

জামিল জাহাঙ্গীর লিখেছেন ভ্রমণ গদ্য। জামিল জাহাঙ্গীরের সাবলীল, রসপূর্ণ বাক্য শীতলক্ষ্যার ভ্রমণকে গীতল ও প্রাণময় করে তুলেছে। শাহাব আহমেদ’র বর্ণনায় পাঠক চলে যান কানাডায়। দেখতে পান নায়েগ্রা চোখ ভরে, শুনতে পান জলপতনের শব্দ। আব্দুর রহমান নিজের গদ্যে পাঠককে ভ্রমণ করান ইলিশের বাড়ি। চাঁদপুর, মতলব দেখেন নৌযানে চড়ে। সারাদিন কাটে “নদী বক্ষে ইলিশের বাড়ি”।

মুক্তগদ্যে প্রচার করেছে পূর্ব প্রকাশিত একটি লেখা। সাহিত্যের পাঠক মূলত দৈনিকের পাঠকই প্রত্যাবর্তন করে লিটলম্যাগে। তাদের চোখ ফাঁকি দেওয়া সহজ না। সুতরাং অনিবার্য না হলে পূর্ব প্রকাশিত লেখা এড়িয়ে যাওয়া সম্পাদকের জন্য কল্যাণকর। এ পর্বে তিনজন গদ্যকারের গদ্য ছাপা হয়েছে। সিদ্দিক আবু বকরের গদ্য তরুণ লিখিয়েদের জন্য খুবই পরামর্শক হিসেবে কাজে দিবে। দেওয়ান রহমান লিখেছেন মোটিভেশনাল লেখা। তার লেখার মূলমন্ত্র “আত্মহত্যাকে না বলি “। জাহানার ইয়াসমীন আরও কিছু বাক্য ব্যায় করলে করতেও পারতেন। অতিসংক্ষিপ্ত শব্দে শেষ করেছেন নিজের বক্তব্য।

চিনুয়া আচেবের লেখা ” আফ্রিকার একটি চিত্র : কনরাডের হার্ট অফ ডার্কনেস বর্ণবাদ” অনুবাদ করে বিশ্ব সাহিত্যের সাথে যোগাযোগ গড়ে তুলতে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। জসিম উদ্দিন তার অনুবাদের মাধ্যমে পরিচয় করিয়েছেন আফ্রিকান সাহিত্য জগতের অন্যতম খ্যাতিমান ও প্রতিবাদী সাহিত্যিকের গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখার সাথে।

সম্পাদক তাসনীম মাহমুদ চিঠি লিখেছেন লুবানা তাশরীফ আর জয়িতার কাছে।
আনিসুর রহমান অপু’ র রুবাইয়াত – ই – রূপনগর শিরোনামে ১৬ টি রুবাইয়াতই একমাত্র রুবাইয়াত গুচ্ছ এই পত্রিকায়।

সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ শাখা নাটক। “নাটক সমাজ বিপ্লবের নিয়ামক সবসময়, সর্বকালে।” “স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ বহু সামাজিক আন্দোলনে সমাজ পরিবর্তনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে নাটক।” ” সমকালে মানুষের প্রয়োজনে মানুষ নাটককে তার মতো করে প্রকাশের স্থানে নিয়ে গেছে।” নাটক নিয়ে আশাব্যাঞ্জক বাক্য শুনিয়েছেন দর্শক, শ্রোতা, পাঠককে নাট্যকর্মী ও লেখক হুসনে মোবারক তাইরানের নাট্যচিন্তা বিভাগে। হুসনে মোবারক আলোচনা করেছেন সমাজ পরিবর্তনে নাটকের প্রভাব নিয়ে। কথা বলেছেন নাটককের ইতিহাস ও আন্দোলন নিয়েও। তার আলোচনায় বিশ্বনাট্যান্দোলনের ইতিহাসও পর্যালোচনা করেছেন।

লেখকদের দিয়ে লিখিয়ে নেয়া চৌকস সম্পাদকের কাজ। লিটলম্যাগাজিন সম্পাদকদের কেউ কেউ এ কাজটি করেন। তার নজরে থাকে লেখকের লেখার দক্ষতার অভিজ্ঞান। যখন কোন একজন লেখক ছড়া ও কবিতায় সমান পারদর্শী। কিন্তু তিনি এখন কবিতায় অমনোযোগী। গভীর মনোযোগ ছড়ায়। তাকে দিয়ে কবিতা লিখিয়ে নেয়া কম কথা না। ছড়া লিখে কেউ নিজের প্রতিভার প্রতি অবিচার করলে তাকে খোঁচাখুঁচি করে কবিতা আদায় করা উত্তম বৈকি। ছড়াগুচ্ছে ছড়া আছে রেবেকা ইসলাম, হুসাইন আল জাওয়াদ,ওয়াজ কুরুনী সিদ্দিকী, বনশ্রী বড়ুয়া রুমি ও হারুন আল রাশিদ। তথ্য পরিচিতিতে উল্লেখ করা হয়েছে রেদওয়ানুল হক ছড়াকার, সংগঠক ও সম্পাদক। অথচ রেদওয়ান ভালো কবিতাও লেখে । ছড়ার হাতও মজবুত। অল্পকথায় বিস্তর বলার বিজ্ঞতায় রেদওয়ানুল হক লেখেন,
রাজনীতি/
আজ নীতি/
চূর্ণ/
রাজনীতি/
আজ ভীতি/
পূর্ণ।( রাজনীতি)”।

চুপ করে থাকা মানেই সব বাদ দেওয়া না। চুপ থাকা মানেই ভুলে যাওয়া ভুলে থাকা না। কোন কোন চুপের আড়ালে আছে কৌশল। আছে প্রস্ততি। ” চুপ করে থাকবো। অপেক্ষা করবো– ধারালো প্রত্যুষের। প্রকাশ্য কামারশালায়, কুঠার ও করাত বানাবো, আজ সারারাত–(সহিষ্ণুতা)। “
কেন, তার কার্যকারণও জানা যায় কবি যখন বলেন– টানা একযুগ,পালাক্রমে, মিথ্যাকে এবং মিথ্যাকেই খাচ্ছি; আর আমাদের ক্ষুধা হয়ে / উঠেছে: এশিয়ার খ্যাতিমান মিথ…. /(ক্ষুধার মিথ)”। কবিতার এই বক্তব্য ও এই কাব্য ভাষা খ্যাতিমান কবির। নাম তার রহমান হেনরি। কবিতাগুচ্ছ আছে নাঈম ফিরোজের।
” রাতগুলো অমন কেনো নিরালা নিরালা/ তুমি কী জাগো অমন? কবিতা– জানালা! ( মাঈন উদ্দিন জাহেদ)”। কবি আফসার নিজাম কবিতায় রেখেছেন ” দীর্ঘ জীবনের বয়ান”। আরও যারা কবিতা লিখেছেন তারা হলেন, সালেহ রনক, ফরিদ ভূঁইয়া, রবিউল মাশরাফী, পলিয়ার ওয়াহিদ, বিপ্লব সাইফুল, ফাতেমা আলী, ফারহানা রহমান, ইশরাত জাহান, মরিয়ম জামিলা শাপলা, মাহবুবা লাকি, ঋতুবৃতা, চন্দ্রশিলা ছন্দা, এস.এ. আজাদ, সরদার আব্বাস উদ্দিন, অধরা আলো, সালমা আক্তার মুন প্রমুখ।
তাইরানের উড়াল সাহিত্যাকাশে হোক ডানা মেলা ঈগলের মতো।

প্রথম সংখ্যার মতো সগৌরবে আসুক পরের সংখ্যা। এবং স্থায়ী হোক তার পদচারণা।

তাইরান। সম্পাদক: তাসনীম মাহমুদ
প্রচ্ছদ : ফরিদী নুমান
নামলিপি: আফসার নিজাম
মূল্য: ২৫০ টাকা।
নভেম্বর ২০২৩
সূচনা সংখ্যা।

পরের সংখ্যাও বাজারে। তাইরানে প্রকাশিত লেখা সবসময়ের জন্য। সংখ্যাগুলো সংগ্রহে রাখা একান্ত জরুরি।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা