ইমরুল হাসান
পত্রিকা পড়া (বা এখন তো আসলে দেখাই) একটা জেনারেশনের অভ্যাসেরই ঘটনা, যেইটা ১৯৯০’র পরে যাদের জন্ম তারা এইটা থিকা বাইর হইতে পারছেন বইলা আমি মনে করি; কিনতু পি.আলো (প্রথম আলো) জাস্ট একটা পত্রিকা বা নিউজ-আউটলেট না, একটা কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট হিসাবে নিজেদের হাজির করতে পারছে; তো, এই ভুলটা অনেকে করেন বইলা আমি মনে করি, যে, উনারা অবশ্যই একটা নিউজপেপার ও নিউজ-আউটলেট, কিনতু একই সাথে একটা কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট, যেইটার বাংলাদেশে তেমন কোন ‘বিকল্প’ নাই…
আওমি-বাকশালি এস্টাবলিশমেন্টে তাদের যেইরকম স্টেইক বা ভাগ ছিল, এখনকার ইন্টেরিম গবমেন্টে সেইটা আরো বেশি আছে; কিনতু কোনকিছু পাওয়ারফুল বইলাই তো সেইটা বাজে না আসলে… বাংলাদেশে পি.আলো’র (প্রথম আলো) ‘সমালোচনাকারী’ অনেক আছেন, কিনতু একইসাথে তাদের নেক-নজর চান না বা তাদের কোরামে শামিল হইতে চান না — এইরকম ডেফিনেটিভ পজিশন নিয়া আছেন সেইরকম ‘লেখক-বুদ্ধিজীবী’ হাতে গোনা কয়েকজনের বেশি থাকার কথা না…
মানে, বেপারটা এইরকম না যে, তাদের অনেক ফ্যান-ফলোয়ার আছে, সেইটা তো আছেই, তার চাইতে বেশি আছে কালচারাল ইন্ড্রাষ্ট্রির ‘একক আধিপত্য’, যেইটারে এড়ায়া গিয়া কোন কালচারাল পজিশন কেউ এচিভ করতে পারবেন – এইটা টাফ…
এই অবস্থাটা অনেকে দাবি করতে পারেন যে, পিপল-এনগেইজমেন্টের ভিতর দিয়া উনারা এচিভ করছেন; কিনতু আমি মনে করি, ইনিশিয়ালি পিপল-এনগেইজমেন্টের একটা জায়গা থাকলেও পরে এবং এখন পাওয়ারের এজেন্সিগুলার লগে এক ধরনের সমঝোতা ও কানেকশনের ভিতর দিয়াই উনারা অপারেট করেন; পিপল এনগেইজমেন্ট একটা ক্লাস-অরিয়েন্টশনের জায়গাতে গিয়াই এন্ড-আপ করছে
যেই কারনে পি.আলো’র (প্রথম আলো) ফ্যান-ফলোয়ার-সার্পোটার এবং সমালোচনাকারী’রা মোটামুটি দুইটা আলাদা কালচারাল ক্লাস ও আইডিওলজিতে বিলং করেন…
তো, এইটা হইতেছে ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা –
১. পি.আলো (প্রথম আলো) একটা কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট
২. বাংলাদেশে আপনি ‘কালচারাল লোক’ হইতে চাইলে এই এস্টাবলিশমেন্টের কোন ‘বিকল্প নাই’
৩. পিপল-এনগেইজমেন্ট না, বরং পাওয়ার-এজেন্সিগুলার লগে স্ট্রং কানেকশন হইতেছে তাদের স্ট্রেংথের জায়গা
২.
তো, পি.আলো’র (প্রথম আলো) কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট’টা কেন খারাপ? এরা ‘ইন্ডিয়ার দালাল’ ‘ইসলাম-ফোবিক’ এবং ‘বাকশালি-রিজিমের সার্পোটার’ — মোটাদাগে এইরকমের কিছু ‘অভিযোগ’ তাদের বিরুদ্ধে আছে, যেইগুলা খুব অরগানাইজডভাবে আর্টিকুলেট করা না হইলেও কম-বেশি তো ট্রু…
এখন এইগুলা হইতেছে তাদের আইডিওলজিকাল পজিশন — যেইটারে আপনি অপছন্দ করতে পারেন, তাদেরকে এই পজিশনগুলা থিকা সরাইতে তর্ক করতে পারেন, কিনতু নৈতিক জায়গা থিকা না, বরং তাদের কাজকামগুলা পলিটিকালি কেন খারাপ — সেইটা বলতে পারাটা আসলে বেটার
তো, এই জায়গাটাতে ৩টা জায়গা আমি হাইলাইট কইরা রাখতে চাই —
১, পি.আলো’র (প্রথম আলো) এসথেটিকাল পজিশনগুলা প্রবলেমেটিক; উনারা যেই ‘বাংলা সংস্কৃতি’রে আপহোল্ড করেন সেইখানে ‘বাংলাদেশ’ কোন সেন্টার-পয়েন্ট না, যেইটা আসলে উনাদেরকে ‘ইনডিয়ার দালাল’ বানায়া রাখে, বাই ডিফল্ট; এবং মুশকিল হইতেছে বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজিবিদেরও এই এসথেটিকাল পজিশনটাতে তেমন কোন ভিজিবল কনশাসনেস নাই, যার ফলে ‘ঐক্য’টা অনেক বেশি সম্ভব হয়
২. আমি মনে করি, এই এসথেটিকাল জায়গাগুলাই একটা পলিটিকাল পজিশন হিসাবে এমার্জ করে; যেইখানে একটা ইসলামের এগেনেস্টে আপনারে ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ ও ‘সেকুলার’ কইরা তোলে না, বরং পিপল-কনসেন্টের বিপরিতে একটা ‘এলিট’ পজিশনরে মাস্ট কইরা তোলে… তো, এইটা যে কোন নন-ডেমোক্রেটিক জায়গারে সাবস্ক্রাইব করার একটা ভ্যালিডিটি তৈরি করতে থাকে, যেইটা বাজে-ঘটনা
৩. লাস্ট বাট নট দা লিস্ট, পি.আলো’র ( প্রথম আলো) কালচারাল মনোপলি এইরকম একটা পোলারাইজেশন তৈরি করে যেন এর বাইরে আর কোন কালচারাল পজিশনই নাই বাংলাদেশে! এইটা যতটা না যুক্তি-তর্ক দিয়া তৈরি হওয়ার ঘটনা তার চাইতে অনেক বেশি কালচারাল পাওয়ারের মনোপলি’রই ঘটনা, যার ফলে বাংলাদেশের আর্ট-কালচারের জায়গাগুলা অনেক বেশি barren বা বন্ধ্যা হয়া উঠছে দিনে দিনে; যে কোন কালচারই পিপল-কানেকশনের বাইরে গিয়া তৈরি হইতে পারে না, কিনতু বাংলাদেশে যেইসব জিনিসগুলারে কালচার হিসাবে তৈরি করা হইতেছে সেইগুলা মোস্টলি এন্টি-পিপল একটা জায়গা থিকা, যেইটার মেইন স্পন্সর পি.আলো (প্রথম আলো) মিডিয়া…
তো, এইটা যে উনারা একলা তৈরি করছেন – তা না, পি.আলো (প্রথম আলো) কিছু মানুশ-জন এবং প্রতিষ্ঠানেরই একটা এলায়েন্স, এবং বাংলাদেশের পাওয়ার-স্ট্রাকচারের একটা এলিমেন্ট, যেইটাতে অনেকেই সাব-স্ক্রাইব করেন, আর এতে কইরা পাওয়ারের কাছাকাছি থাকাটা সহজ হয়, নানান-ভাবেই
মানে, কালচারাল পাওয়ারের জায়গাটারে রিকগনাইজ করতে রাজি থাকলে, এইটা আরো ভালো-ভাবে ভিজিবল হইতে পারবে আর কি…
আপাতত, এইটুকই, বাদবাকি আরো অনেক আলাপ তো আছেই।