…………..
ক্ষুধার গ্রহ
……………
যে পাত্রে চিরন্তন বিশৃঙ্খলা
সেটা ক্ষুধার সোনালি মানচিত্র
পৃথিবীর থেকে অদ্ভুত বড়ো এক গ্রহ
আর একটি কবরের থেকেও সংক্ষিপ্ত নির্মাণ পৃথিবীর
ক্ষুধার গ্রহ
অস্তিত্বহীন সময়
একটা বিকৃত মুখ ধূসর
আমার রোগশয্যার কাঁচে একটা একটা করে লিখছি আত্মীয়দের নাম
মরা গাছের ডালে ছড়িয়ে রয়েছে মহাবিশ্বের বিভ্রান্তি
গ্রামগুলোয় মোতায়েন করা সৌরলোক
আহারে
ওষুধে
ছাইয়ের রক্তে ফুটে উঠেছে জীবন
জঙ ধরা কনুই থেকে লোহার শব্দ উঠে আসছে
ঘৃণার মধ্যে ভালোবাসার এত বাড়াবাড়ি
তাড়াতাড়ি একটা অসম্পূর্ণ শিল্পের মধ্যে ঢুকে পড়ো
দেখো কিম্ভুতকিমাকার এক তৈলচিত্র
আমি ঘামছি দেখো সমুদ্রের মতো
আমার গলায় বেঁধে আছে পর পর নৌকার সারি
আমার ভাতের নাম সবুজ ধুলিকণা
একটু সময় ছিনিয়ে নাও
দেখো রাজার ভূত তাড়া করছে শহরকে
চাঁদকে বন্দি করে রেখেছে সোনার খাঁচায়
রূপকের বালিয়াড়িতে ভেসে উঠেছে জলের কুমির
জনারণ্যের কুঠার
আমাকে সেদ্ধ হতে দাও আগুনের কবিতায়
একটি পাত্রে রাখবো আমার জিভ
জীবনের উত্তরদিকে আমার মাথা
আর পাল তোলা শস্যের জাহাজগুলো নিয়ে দক্ষিণ দিকে বয়ে চলেছে আমার রক্তধারা
……………….
আমাদের মুখের নাম পৃথিবী
……………….
আমি খুঁজে পেয়েছি একটি পাত্রে রাখা জলের মধ্যে রূপালী হৈচৈ
তোমার কি মনে হয় না এক নামজাদা হাসপাতালের সামনে স্ট্রেচারে করে বহন করছি সময়
আর ইতিহাস জ্বলছে আমাদের জামাকাপড়ে
ডাক্তাররা আকাশমানব
ওষুধ নানা রকম পাত্রের মধ্যে অতি নাক্ষত্রিক
নার্সরা ছায়াগুলোর পরিদর্শনে গেছেন
কিছু শব্দ তোমাকে কষ্ট দেয় বুকের মতো
যেমন এক রাজার গালে মাংসল শহর
নেকড়ের মতো পালাচ্ছে গহীন জনারণ্যে
আর ছড়ানো রক্তে ঈশ্বর আঁকছে আমাদের জীবন
পৃথিবীটা এত দুর্বল যে বাস করার জন্য আমাদের কাছে অভিবাসন চায়
তোমার এবং আমার মুখমণ্ডল আঠা দিয়ে জোড়া এক চরম উচ্চতা
আমাদের মুখের নাম পৃথিবী
…………….
মানচিত্র
…………….
আমার হাঁটু একটি ট্রাজেডি ঘর
ওই তো ওইখানে পড়ে আছে একটি অখণ্ড রুটি
আর বিপরীতমুখী পৃথিবী
মানচিত্র এক এক্কাগাড়ি
যখন ফাঁকা মাঠ প্রসব করে শকুনের ঝাঁক
আমি ক্ষুধাকে দেখি স্বর্ণখণ্ডের মতো
পালিয়ে যাওয়া দূরবর্তী দিগন্ত
এখন তুমি বলো
তুমি কি দেখেছো কাউকে বহন করতে নিজের লাশ
দেখেছো কি কোনো পিতা তার শিশুসন্তানকে জানাজা ছাড়া কবর দিয়ে এক বিষুবরেখা দিয়ে ফিরে যাচ্ছে
আমি নরকের সৌন্দর্যকে ভালোবাসি
তুমি আমার গ্রন্থটি প্রকাশ করো
আর প্রকাশক বলো মৃত্যু কোনো ক্ষতি পুরোন দেয় না