গোলাম রসুল
…………..
যুদ্ধের প্রথম দিনে
…………..
যুদ্ধের প্রথম দিনে একটি কামানের মধ্যে আমার জন্ম
ধর্ম আকাশে লোহা উৎপাদন করছে
কোনো ভাড়াটেকে বাঁচাতে পারেনি চাঁদের আলো
রাষ্ট্র জলের মতো মৌলিক নয়
এদেশ ওদেশ সেদেশে প্রতিদিন ভীষণ একাউন্টার
কবরের নামগুলো স্বীকার করে না কোনো রাষ্ট্র
একটি ছায়ায় ভেঙে যায় আদালত
কোনো বই যুদ্ধ থামাতে পারেনি
কোনো লেখা খুঁজে পায় নি ঈশরকে
আমি যুদ্ধ
আমার চোখ রাইফেলের গুলি যার মধ্যে সূর্যও রয়েছে
আমার মুখ পৃথিবী
আমার মধ্যে পৃথিবীর সব দেশ বসবাস করে
—————————
……………
এবং আমি
……………
এই গভীর রাত আমার কালো মলাটের বই
আর যত তারা জ্বলছে সব আমার মাতৃভাষার বর্ণামালা
পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশী বার পঠিত হয়েছে ওই তারাগুলি
এবং হয়তো তারারাও সবচেয়ে বেশি বার স্মরণ করেছে মানুষকে
আর সেই জন্য এই মহান রাত্রিতে আমি আমার পিতৃপ্রদত্ত নাম পরিত্যাগ করে আমি আমার নাম রাখলাম মানুষ
এবং আগামীকাল যখন সূর্য পৃথিবীকে কামড়ে ধরবে তখন আমি সূর্যের মতো কামড়ে ধরবো আমার জীবনকে
সূর্য বিস্ফোরণ হবে আমার জীবন
আমি বজ্রপাতের লাঙলের ফলার মতো চষে বেড়াবো মাটি
আমি খুঁজবো সর্বশ্রেষ্ঠ শস্যটি
সবকিছুর নিচে দিয়ে মধ্য দিয়ে ওপর দিয়ে
চলে যাবো শূন্য ফুঁড়ে
তারপর এক শিখর থেকে পাঠ করবো বহু দূরবর্তী ধবনি
এবং আমি অজস্র অসংখ্য বয়ে যাবো বিশাল বহুদূর আমার ভেতরে
————————-
………..
কবিতা
…………
এক জীবন্ত বইয়ের মধ্যে আমি প্রবেশ করেছিলাম
এবং একটা কবিতা লিখেছিলাম
আমি অর্থহীন ঘুরছিলাম বইটার মধ্যে
যেমন আকাশ আমাদের সঙ্গে অর্থহীন ঘোরে
এবং সেই মহারাত্রিতে আমার কাছে কোনো কাগজ কলম ছিলো না
তবুও আমি একটা কবিতা লিখেছিলাম
শুক্লপক্ষের চাঁদ কলম
এবং পৃথিবীকে কাগজ করে
আমি যখন লিখছিলাম যত গ্ৰহ ছিলো সকলে এবং নক্ষত্ররা মৌন ছিলো
আমি লিখেছিলাম অর্থ সৃষ্টির আগের সেই কবিতাটা
————————-