সাজ্জাদ সাঈফ
১.
ভাবতে পারি এসব কিছুই ঘটেনি আমার জীবনে।
না মিম্বর, না পানশালাঢেউ, না চিনির কৌটা ঘিরে থাকা পিপীলিকাদল, না জীবনের কাছে এসেছিলো, না ভালোবেসেছিলো কেউ!
ভাবতে পারি এ জীবন ফিলিস্তিন
মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের পর মাটিচাপা কারো
শাহাদাত অঙ্গুলি আকাশে তাক করা আর যেন
খোদাকে বলে দিচ্ছে এই মিসাইলমত্ত যুগে
তোমাদের উৎসবমুখর চরিত্রের কথা, নির্লজ্জ
নির্লিপ্ততার কথাও।
এই যে সিনেমা দেখে ঘরে ফিরবার তাড়া, মাসিক বাজার সারা, নিয়মিত ঘুমপান তুমি ঘাড় ধরে সেট করে দিচ্ছো বাঁচার রুটিনে সবার, এর মানে হয় সেঁচ মৌসুম জুড়ে পিপাসা মেটাবে নদী, আর মূলত এর মানে হয় উম্মাহকে তার কসম হারিয়ে দুনিয়ায় মশগুল রেখেছো তুমি।
খোদার ওয়াস্তে বলো হে আরব
জীবনে প্রবেশ করে কবে আর একেকটা আগুনমঞ্জরি ডানা মেলে উড়বে সবার ঘরে? উদবাস্তু গাজা ফিরবে আবার ঘরে? মাটি কি জায়গা দিবে তোমাদের কবরে?
০২.
যতদূর চাই কলেমাখচিত কফিনে ছেয়ে আছে নগরী ও নহরগুচ্ছ, দেখছেই না আরবদুনিয়া, ইয়াকুবের অন্ধত্ব চোখে নিয়ে চারদিকে প্রতিবেশিদেশ প্রমোদভ্রমণে রাজি।
যত উঁচুতে চাই শিশুকফিনের সারি গুচ্ছের সিড়ি হয়ে সিদরাতুল মুনতাহা, অল্পতেই পাবে খোদারও দেখা তারা মরু ও পার্বত্যের থোকা থোকা ফুল, রক্তরঞ্জিত!
তুমি আমি আর ট্রাম্প
ফেসবুকে সেইসব ফুল স্কিপ করে চলে যাচ্ছি শান্তিপ্রস্তাবে, সিনেপ্লেক্সে ওড়া ডেমনের চিৎকারে, সেভ দি চিল্ড্রেনের অভূতপূর্ব বিজ্ঞাপনে।
আমরা সুন্দর
আমরা শান্তিপ্রিয়।
০৩.
অনেক দিন হলো ভালোবাসাবাসি কৃত্রিম এখানে অথচ লড়াইগুলি সত্যি। এখানে সম্পর্ক প্রাকৃতিক নাই ভরা চৈত্রে। ধুলি ও ধানখড় ধূসরতা নিয়ে সূক্ষ্মতম চিন্তা কে আর করে এখন?
আর কবে ধর্মের মেলবন্ধন পেয়ে শান্ত হবে হৃদয় কোনো কোজাগরী গানে, শায়েরি-গজলে? এক জন্মে অঢেল সময় কার আছে কও? চলো আমরা গানের ভিতর হতে, মধুর গজল হতে, সুরেলা কোরান হতে হতে উদ্ধৃত করি গণমুক্তির ইতিহাস, উজ্জ্বল ফিলিস্তিন, নতজানু জায়নিজম।
প্রকৃতি ভণিতা করে না, প্রকৃতি যার গন্তব্য তারে সমীহ করছে মেঘ, মাথালবর্ণ পাখি ও প্রান্তরহীন ঘর; গেরস্থালি যার শ্রেণীভেদহীন, অনাচারহীন, তরঙ্গদোল নৌযান তারে সামলে ভাসো মাঝি; চলো যাই সত্যে মিলাই বুক, বুকের ক্বলব!
ভালো লাগলো।
মানবতা মুক্তি পাক।