রেজাউল করিম রনি
যুদ্ধ ছাড়া ফ্যাসিবাদ টিকতে পারে না। হয় নিজের দেশের ভেতর না হয় অপর দেশের সাথে সব সময় তকে যুদ্ধরত থাকতে হয়।
কিন্তু ভারত, পাকিস্তান এবং গোটা দক্ষিণ এশিয়া কোন ভাবেই একটা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত না। এফোর্ট করতে পারবে না।
দুইটা নিউক্লিয়ার ওয়েপন ওলা দেশের উজবুক জনতা যেভাবে যুদ্ধের উম্মাদনায় সোসাল মিডিয়াতে মেতে আছেন তাতে মনে হয় এরা যুদ্ধ ছাড়া আর কোন কিছুতে শান্তি পাচ্ছেন না। মিডিয়া দুনিয়াতে বহু যুদ্ধের জন্য দায়ী। ইন্ডিয়া যে ভাবে ভূয়া তথ্যের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে তাতে এই মিথ্যা তাকে ডুবাবে –এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। কিন্তু ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষের। উজবুকির শাস্তি কিন্তু পেতে হয়। যারাই এটা করবে শাস্তি মাস্ট।
যাহোক, যুদ্ধ দেখতে উদগ্রীব এমন এক বিপুল উম্মাদ সমর্থকদের চাপে– চা-ওলা যদি ফলস অপারেশনও চালায় এবং তা পাকিস্তানের ভূ-খন্ডে হলে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে চোখের পলকে। যুদ্ধের আগের সব পরিকল্পনা যুদ্ধের মাঠে হুবহু কাজে লাগে না। যুদ্ধ নিজেই নিজের নিয়তি ঠিক করে দেয়। ফলে ভারত-পাকিস্তান যেমন চাইবে ঘটনা তেমন নাও ঘটতে পারে। এক মাত্র মৃতরাই যুদ্ধের শেষটা দেখতে পারে। জীবিত মানুষ যুদ্ধের পক্ষে দাাঁড়লে সে অন্ধ হয়ে যায়। কিছু দেখতে পায় না।
আর পাকিস্তানের চোরদের সম্মেলনে যে ক্ষমতাসীন জোট তারা এটা ভালো করেই জানে জনগণ তাদের কতটা ঘৃণা করে।
জনতা পাশে না থাকলে যুদ্ধে তাদের অবস্থা কতটা কেরাসিন হবে এটাও জানে। ফলে তাদের জন্য এটা খুবই আন টাইমি অবস্থা। কিন্তু আক্রমণ হয়ে গেলে তাকে– হয় মরো না হয় মারো নীতিতে যেতে হবে। কৌশলগত কোন অর্জন তাদের দিক থেকে আদায় করা কঠিন। কারণ তারা চোর, ভন্ড এবং কোন ঐক্য নাই।
ইমরান খানকে কতটা দরকার ছিল এখন হয়তো বুঝবে পাকিস্তান। তবে আসলেই যুদ্ধ যদি লেগে যায় ভারত অনেক বেশি ক্ষতি সাধণ করবে পাকিস্তানের। কিন্তু মাইর খাবে বেশি ভারত। কারণ পাকিস্তান মুটামুটি ওয়ার অন টেররের পর থেকে যুদ্ধের মধ্যেই আছে। ভারত তেমন কোন যুদ্ধের মধ্যে নাই অনেক বছর।
ভারত বেসামরিক জায়গায় হামলা করেছে। এতে অনেক সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ইতোমধ্যে। আর পাকিস্তান সামরিক ঘাটি বেছে নিয়েছে। এয়ার বেইস আক্রমণ করেছে। এই পর্যন্ত ২ টা রাফায়েল নামাইছে।
আরও ৫ টা ছোট ছোট বিমান বা কাপ্টার ফেলে দিছে বলে খবরে দেখলাম।
ভারতের কোন খবরই বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। এরা পুরাটাই ভূয়া তথ্যের উপর ভাসতেছে। এইটা ভারতকে ডুবাবে। পাকিস্তানের ‘ডন’ মুটামুটি খবরের দিক থেকে বিশ্বাস যোগ্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আল জাজিরাই ভরসা। পাকিস্তান সব সময়ই ভারতের মিলিটারি ক্যাপাসিটিতে আঘাত করতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এই যুদ্ধে সে জনতার সমর্থন পাবে না সাধারণ মানুষকে ক্ষতি করে। কিন্তু ভারত লাশ উপহার দিয়ে তার উম্মাদ জনতাকে শান্ত করতে চেষ্টা করবে। পাকিস্তানের সেই চাপ নাই। জনগণ এখনকার শাসকদের ঘৃণা করে। এরা চোর এটা সবাই জানে।
ভারত আন্তর্জাতিক তদন্ত, প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে এই আক্রমণ চালিয়ে মানে প্রথম হামলা করে ব্যাকফুটে চলে গেছে। এটা ছড়িয়ে পড়লে সরাসরি যুদ্ধের পুরো দায় ভারতকে বহন করতে হবে। কিন্তু এই দায় ভারতকে দেয়ার জন্য যে ধরনের লিডার দরকার পাকিস্তানে তা নাই। পাকিস্তান অনেক জায়গায় সুবিধা করতে পারবে যদি তারা ঠিক মতোন ডিল করতে পারেন। তবে প্রথম কাজ হবে যুদ্ধকে সীমিত রাখা। বিশেষ করে কাশ্মির এর বাইরে না নেয়া। পাকিস্তানের প্রথম কাজ হবে কাশ্মিরকে গেরিলা যুদ্ধের ফ্রন্ট বানিয়ে দেয়া। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে মনযোগ দেয়া। কাশ্মিরের জনতা ভারতকে দেখে নেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। সেটাকে ফ্যাসিলিটেট করতে পারলে ভারত পস্তাবে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে মুক্ত করার জন্য এই যুদ্ধটা হলে এবং শুধু এই রিজিয়নে এটাকে আটকে রাখতে পারলে ভারত ধরা খাবে এক সময় না এক সময়। কারণ জনতা ভারতকে সাইজ করে দিবে। তবে যে কোন মূল্যে ভারতের সাথে সরাসরি যুদ্ধের ক্ষতি এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করতে হবে। আর যুদ্ধ লাগলে এর দায় গোটা দুনিয়াকেই বহন করতে হবে।
দুইটা পারমানবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধের উম্মাদনা যারা ছড়ায় তাদের সুস্থ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। যে কোন মূল্যে এই যুদ্ধাবস্থা বন্ধ করতে হবে।