কাজী নাসির মামুন
এক
তালার বিপক্ষে আমি চাবি হয়ে নাড়িয়েছি মন
নগর ভবনে গিয়ে বলেছি, অনেক অনুদান
নিষ্ফল রাস্তায় গড়াগড়ি যায়; খুলে দাও প্রাণ।
তোমার আত্মায় বসে গড়ে তুলি নিজের ভবন।
জরায়ু বিমুক্ত করে জঠরের কত নবায়ন
ভালোবেসে খুলে দেয় শিশুদের স্তনের বাগান
আমার চাবির দিকে তুমি যদি জরায়ুর ত্রাণ
জনতায় বয়ে যাবে আমাদের প্রেমের ফলন।
মেয়র ঘনিষ্ঠ হলে কারো কারো দিন খুলে যায়
দুয়ার আটকে থাকে প্রজনন ভীরু প্রগতির
বিফলতা থুতু ফেলে, তাই নিয়ে কাড়াকাড়ি প্রায়!
সব পাখি পরিযায়ী, কাক শুধু নগরে হাজির।
তুমি তালা আমি চাবি, সুরক্ষিত এতো প্রেম নেই
আমাদের দিন কাটে কাকেদের ঝগড়া দেখেই।
দুই
অগ্রগণ্য পৃথিবীতে ঝগড়াও অতি আধুনিক;
পাতাল রেলের মাটি খননের মতো দীর্ঘ দিন
দড়িবাঁধা স্বপ্নে চলে জনরুচি, জীবনের ঋণ।
পিঠের ওপরে কবরের ভার; রোদ চিকচিক
দয়ার আলোয় নষ্ট দাবি দাওয়া তবুও বৈশ্বিক।
ঘরের ছেনাল পুলকিত, মরা সময়ের আলপিন
প্রেমের নিতম্বে গেঁথে গেলে আমরাও মিসকিন।
হাত পাতি, চেটে খাই অন্য নামে নিজেকে অধিক।
শৃঙ্গারের খোলা মাঠে দূরাগত সোনার আড়ৎ
বিমান বন্দরে গোপনেই নামে। তোমার স্পর্শের
অতল ময়না পাখি এখনও কি পুরোপুরি সৎ?
সব বলে? দেহে ভরা বিদেশীর চোরাচালানের?
ঝাঁকি দিলে ভেঙে যায় শরীরের রুগ্ন পিরামিড
হৃদয়ে পরার্থপর? তবে তুমি শুধু হাইব্রিড।
তিন
প্রেমের জমিনে কত হাইব্রিড বড় অফিসার
পরের মাথায় শুধু বিলি কাটে, ঘোরায় আঙুল।
চরিত্রে জাতীয় রঙ, শাপলাও জংধরা ফুল।
ফুল নয়, প্যানশন, টেবিলেই ভাসে অধিকার;
আগাম কিছুটা চায় প্রাণযোগ সুডৌল মুদ্রার।
আব্বার ক্লান্তির পাশে আমাদের প্রেমের মুকুল
যেন তুমি স্পিড মানি, ছড়িয়েছো লেলিহান চুল
আমায় ধরেছে নেশা সততায় টাকা ছাড়াবার।
স্খলিত চেয়ারে বসে গিরগিটি বহু রঙ ধরে
রঙের আকল বুঝে হাতে হাতে গুঁজে দেই কিছু
পেনশন ফুলমধু ভ্রমরের উড়ন্ত স্বাক্ষরে
নীতির দুর্ভোগ ছুঁয়ে এসেছে আব্বার পিছু পিছু।
আম্মার কপালে ঘাম দুরূহ টাকায় মোছে না তো
সমাজ আগুনে পুড়ে ছাই দেবে, যদি হাত পাতো।
চার
আগুন বাজারে থাকে; হৃদয়ের নতুন পকেট
হাওয়া ভরা। আগুনের সাথে তার সম্পর্ক বিরূপ।
চাল ডাল পেঁয়াজের সাথে তবু দহন কিরূপ
ব্যাগে ভরে আসে, সেটা সমাজের সকল গবেট
ভালো জানে। জানে না ক্ষুধার্ত বড় সাহেবের পেট।
পুঁইপাতা ডেকে নিলে চিচিঙ্গাও পাতিলে নিশ্চুপ;
আমার পকেটে ওঠো, জ্বালাময়ী প্রেমের লোলুপ
অনশনে প্রাণ দাও, নেমে যাবে বাজারের রেট।
বেকার নিজেই ছবি ললিত স্বপ্নের বুকে আঁকা
অসমতা ঘন হলে আঁকিবুঁকি বদ স্বভাবের
জীবন উদরে নিয়ে বাজারের সব পথ বাঁকা
মামার প্রভাবগুণে চাকরিও টাকাওয়ালাদের।
সমাজের নষ্ট ডিমে হীন প্রেম, কত বুজরুকি;
অবৈধ কুসুমজন্ম কচি হাতে ভাঙো প্রিয় খুকি।
পাঁচ
খুকিদের পাশের বাসায় বাতাসের সিটে বসে
খবর দিয়েছে মুখ চালাচালি অনেক মৃতের।
প্রাইভেট প্রেকটিসে বেলা গেলো কত ডাক্তারের;
রেলের স্লিপার যেন লাশগুলো, গতির রম্বসে
মানবতা জ্যামিতি শেখায় বুকে চাকা ঘষে ঘষে।
রোগের অনতিদূরে হাহুতাশ, রুগীরাই ফের
শরীর জড়িয়ে থাকে মৃতপ্রায় হাসপাতালের;
স্টোর রুমে ঔষধ এখনো গিলে উদ্বায়ু রাক্ষসে।
ইমার্জেন্সি খোলা রেখে জেগে থাকে সারি সারি রাত;
জীবন এখানে নয় সাদা সাদা নার্সের এপ্রোন;
অন্ধকার ফাটাফাটি, গলাকাটা দেশের স্বজাত;
ডেটলগন্ধের পাশে তোমাকেই ডেকে আনি বোন।
ওয়ার্ডের নানান ব্যাসে ফ্লোরে শোয়া ব্যাধির সার্কেল;
ক্ষমতাও ন্যাড়া মাথা, প্রেম এসে তেল মারে, তেল।