spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদপ্রবন্ধনির্জনে নক্ষত্র : কবি মাহবুব হাসান

লিখেছেন : সোহেল মাহমুদ

নির্জনে নক্ষত্র : কবি মাহবুব হাসান

সোহেল মাহমুদ 

স্বাধীনতা পরবর্তী খণ্ডিত বাংলার কবিদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে সূচিত হয়েছিল অভূতপূর্ব কাব্যিক উন্মাদনা। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শিল্প-সাহিত্যকে দিয়েছে অনুচ্চারিত শব্দের স্বাধীনতা। অপরিচিত উপমার অনন্য কারুকার্য।

সত্তর দশকেই ঝাঁঝালো বুলেট আর বিস্ফোরিত বারুদে জন্মলাভ করেছে লাল সবুজের পতাকা, দ্রোহের পৃষ্ঠায় রচিত হয়েছে অচেনা চিত্রকল্পের অনবদ্য কবিতা। সেইসব বিপ্লবী কলমের অন্যতম ধারক ও বাহক কবি মাহবুব হাসান। তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা।

বাংলা সাহিত্যে পিএইচডি করেছেন। সংবাদপত্রের সম্পাদনা বিভাগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন।

জন্ম টাঙ্গাইল জেলায়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৫৮ টি। প্রথম কাব্যগ্রন্থ “তন্দ্রার কোলে হরিণ।”

কবিতার সাথে সহবাস করছি ছাত্রজীবন থেকেই। এখনো ভীষণ তৃষ্ণাকাতর অপঠিত অচেনা কবিতা সমগ্রের। দেশি-বিদেশি নানান কবির ভালো কবিতার অন্বেষণে আয়ুর অপব্যয় করছি আজ অবধি। প্রযুক্তির কল্যাণে, ফেসবুকের বদৌলতে পরিচিত হয়েছি নিজ দেশের অসংখ্য গুণী কবির অসাধারণ কবিতার সাথে। দীর্ঘদিন পরদেশি কবিতায় পায়চারি করার পর, স্বদেশের মেধাবী কবিদের অসামান্য কবিতা পড়ে মনে হলো 

রবি ঠাকুরের সেই অসাধারণ কবিতার বহুল পঠিত কয়েকটি পংক্তি–

“বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা 

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া 

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া 

একটি ধানের শীষের উপরে 

একটি শিশির বিন্দু।”

কী আশ্চর্য! আমার দেশে কত প্রতিভাবান কবি এখনো অচেনা আমার। অপঠিত তাদের অসংখ্য কবিতা। যেখানে পুঞ্জিভূত হয়েছে এ দেশের শিল্প,সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অসামান্য ইতিহাস। সত্তরের দশকে যে সকল কবি এক নতুন মাত্রা দিয়েছেন বাংলা কবিতায়, সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কবি ড. মাহবুব হাসান।

গতানুগতিক ধারার বিপরীতে তার কবিতায় সংযোজিত হয়েছে উপমা, উৎপ্রেক্ষা, রূপক ও অধিবাস্তবতার এক অনুপম চিত্রকল্প :

“কাল সকালে বৃষ্টি আনলাম আঙুলে। ভিজতে দিলাম পৃথিবী-প্রকৃতি বেদনা আর কষ্টের হাঁসফাঁস। 

সেই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যমদূত এসে দাঁড়ালো আমাদের পরবাসী বোধের দরোজায়।

আমি তাকে বললাম তোমার চেহারা যেন কোথায় দেখেছি!

সে হেসে বললো আজরাইল।

গতকাল তার মেহমান হয়েছিলাম। সে আমাকে ঘাম দিয়ে শাদাভাত আর শাহাদাতের বানী মিশিয়ে

খেতে দিয়ে মহাকাশে ত্রিশঙ্কু হয়ে গেলো।

আমি জলের জন্য আকাশ চাইলাম,

সে আমাকে আকাশের বজ্র-বিদ্যুতের নহরে ছেড়ে দিয়ে উধাও!

আমি বলি এই গল্পটিকে আমের আচারে কয়েক কোটি বছর ভিজিয়ে রাখো।

সে বললো আমি জল খেতে এসেছি। 

আমার গলায় আটকে আছে গোটা প‍ৃথিবী। আমি শ্বাস নিতে পারছি না।

আমি মরে যাবো। আমাকে বাঁচাও, জল দাও।জল দাও।

আমি হেসে উঠি আকাশ যেমন বজ্র-বিদ্যুতে হেসে ওঠে।

মৃত্যু এখন মরণ যন্ত্রণায়, আর আমি জ্যাকসন হাইটসের দিকে যাবো সাবওয়ের অন্তরে উঁকি দিতে।

আমার জন্য জ্যামাইকা অপেক্ষা করছে প্রেমিকার উৎকণ্ঠাকে গলার হার বানিয়ে।

সে বললো, আমি যমদূত, আমাকে এড়াতে পারো না।

আমি বললাম সে তো হিন্দুদের জন্য। আমি তো মুসলমান। আর থাকি খ্রিস্টান পৃথিবীর অন্তরের রাজধানীতে,

তুমি অন্য পথ দেখো।

সে নাছোড় ভীষণ যেন সে বিভীষণ এক আগলে দাঁড়িয়েছে আমার পথ।

আমি তাকে একপাত্র পানি দিলাম।

সে বললো পানি না, জল। 

আমি খলবল করে উঠলাম, তুমি শালা মওতের চাকর হয়েছো,

জল আর পানির পার্থক্য বোঝো না। 

পথ ছাড়ো। নাহলে কপ কল করবো ৯১১-এ ডায়াল করে।

শুনেই তার পিলে চমকে গেলো।

যমদূত পানি খেলো জলের সুষমা নিয়ে এবং মুহুর্তে উধাও।

আমি হাঁটতে হাঁটতে জুকারকে বললাম এই কবিতাটিকে অভ্রতে কম্পোজ করে

পোস্ট করে দিতে। সে আমার মেমরির ভাজি খেতে খেতে উত্তর দিলো 

ইয়েস।”

(বৃষ্টিতে যমদূত)

এই কবিতাটিতে রূপক আর উপমার গলাগলি পাঠকের ভাবনায় গভীর নিবিষ্টতা তৈরি করে।

শুধু গতানুগতিক ছন্দে বিনোদনের নিমিত্তে নয়, কোন একটি দশকের চেনা চরিত্রে আটকে থেকে নয়, বরং বর্তমানের অনুষঙ্গ নিয়ে কবি নির্মাণ করেছেন পরাবাস্তব চিত্রকল্পের অসাধারণ কাব্যিক পোট্রেট। তাঁর তুলতুলে আঙুল কখনো হয়ে ওঠে ঈশ্বরের শাণিত তরবারি! তাইতো কবি ভয়ংকর মৃত্যুদূতকেও অনায়াসে বলতে পারেন,

“তুমি শালা মওতের চাকর হয়েছো, 

জল আর পানির পার্থক্য বুঝনা।

মাহবুব হাসান এর কবিতায় বিষয়বস্তুর কোন গণ্ডিবদ্ধতা নেই। তার স্পর্শে যেকোন বিষয় কবিতা হয়ে ওঠে। তিনি বসবাস করেন কবিতায়।

নিজের সম্পর্কে তাঁর সরল স্বীকারোক্তি রহস্যের ভেতরে জন্ম দেয় আরএক রহস্যের।

“কবিতার ভেতরে শুয়ে আছি , কে যেন নাম ধরে ডাকলো!নাম!! আমার নাম? কিসের নাম? আমি তো আমি, তার আবার নাম কি?সে কি কোনো চিহ্ন? নাকি অচিহ্নিত, অদৃশ্য, নিরাকার কোনো কিছু?”

তাঁর প্রতিটি কবিতায় অদৃশ্য হয়েও প্রবল দৃশ্যমান তিনি। প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙ্গার নির্ভীক প্রবণতা– তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সাদাকালো শব্দের সুনিপুণ কারিগর হিসেবে।

“আমি যে মানুষ ছিলাম এতোকাল সে ছিলো অচেনা

নতুন মানুষ আজ সূর্য়ের সারথি হয়ে জ্বলে উঠলো।

আমি পৃথিবীর সমস্ত আলোর উৎসের কাছে জানতে চাই

আমার জন্মের মুহূর্তটিকে আমাকে দাও।

আমি চাইছি,

তুমি আমাকে ফেরাতে পারো না।”

(মুহূর্ত ভেঙে)

একজন শক্তিমান কবিই এমন করে বলতে পারেন:

“আমি পৃথিবীর সমস্ত আলোর উৎসের কাছে জানতে চাই 

আমার জন্মের মুহূর্তটিকে আমাকে দাও।

আমি চাইছি,

তুমি আমাকে ফেরাতে পারো না।”

তাঁর প্রতিটি উচ্চারণ এক একটি কবিতা। 

প্রতিটি শব্দ ব্যাপক আন্দোলিত করে পাঠক হৃদয়। দুঃসময়ের নিদারুণ বাস্তবতার নিরিখে কবি নিজেকেই উপস্থাপন করেছেন একজন নিরীহ অন্ধ এবং সুবিধাবঞ্চিত নাগরিক হিসেবে।

যারা তাঁর দৃষ্টিহীনতাকে পুঁজি করে আয় করে গৌরব, আয় করে নরক গুলজার।

অন্ধ চোখেও কবি অবলোকন করেন মানুষের চুরি-চামারি, লুচ্চামি, ফেরেব্বাজি ও আত্মপ্রবঞ্চনার ধারালো খিল। আশাহত হলেও নিরাশ নন কবি। তাঁর হৃদয়ে উদ্ভাসিত গভীর প্রত্যয়–

“আমি সেই অন্ধ

যার চোখে আলো নেই, কিন্তু আছে নক্ষত্রের 

জ্যোৎস্না-ধোয়া ভালোবাসা।”

“আমি সেই অন্ধ 

যাকে তুমি দেখো প্রতিদিন রাস্তার কোণায়!

সেখানে কোনোই ভিড় নেই;

দাতা নেই, কেবল শূন্যতা বাওকুড়ানির মতো

আমাকেই ঘিরে রাখো ;

আমি দেখি 

তারা দৃষ্টিহীনতাকে পুঁজি করে

আয় করে গৌরব, করে নরক গুলজার ।

আমি কী তোমাদের কেউ নই হে মানব !

আমি সেই অন্ধ

চারদিকে এতো অন্ধকার, তবু

দেখি মানুষের চুরিচামারি,লুচ্চামি,

ফেরেব্বাজির ঘূর্ণি দিয়ে তারা বুনে চলে

আত্মপ্রবণ্চনার ধারালো খিল, সেই

কিলক একটার পর একটা গেঁথে যাচ্ছে

আত্মার আলোকমালায়, আর নচ্ছার বাতাস

পুঁজিপতির ঘোরেল চিন্তায় 

পাক খাচ্ছে সমুদ্রের চোরস্রোতের সঙ্গীতে !

হে আমার মাধবীলতার ভোর

তুমি কি দেখতে পাও আর!

আমি সেই অন্ধ

যার চোখে আলো নেই, কিন্তু আছে নক্ষত্রের 

জ্যোৎস্না-ধোয়া ভালোবাসা।”

(কবিতা : আমি সেই অন্ধ)

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির রক্তে লেখা অমর কাব্যগ্রন্থ। কবি মাহবুব হাসান নিজেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন কাদেরিয়া বাহিনীতে। যুদ্ধজয়ের সফলতা এবং মুক্তির মহামিছিলে উচ্চারণ করেছেন শিকল ভাঙার অসামান্য কাব্যিক স্লোগান!

“পাখিদের আমি ঈর্ষা করতাম। তাদের স্বাধীনতা আমাকে স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করতো। কিন্তু আজ আমি নিজেই তো স্বাধীন। তিরিশ লাখ শহীদের রক্তের নদীতে সাঁতরাতে সাঁতরাত আমি উড়তে শিখেছি।”

(কবিতা : কাল রাতে)

স্বাধীনতাউত্তর বাংলা কবিতায় নানা বৈচিত্রে অনবদ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। কবি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এর ভাষায় “কবিতায় নতুন কি লিখবো, যখন বুকের রক্তে লিখেছি- একটি নাম– বাংলাদেশ।

মুক্তিযোদ্ধা কবি মাহবুব হাসানের বিষয়টিও ব্যতিক্রম নয়। তিনি একাত্তরের রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন নয় মাস। তাঁর যাপিত জীবন রূপসী বাংলার সুধাগন্ধে ভরপুর।

তাইতো ধানের খুশবু আর মিথলজি মিলে রচনা করেছেন–

“তুমি তো জমজ নারী বীজরূপী হাওয়া আর সীতা

ধানের খুশবু তুমি বাংলাদেশ আমার কবিতা।”

(কবিতা : বাংলাদেশ আমার কবিতা)

একজন কবি তার সময়কে ধারণ করেন কবিতায়।

কবি মাহবুব হাসানের ভাষায়–

“ভাষা একটি সাংস্কৃতিক পণ্য বা পরিবহন মাধ্যম। সে কবিকে পরিবহন করে, তার চিন্তাধারা ও সৃষ্টির ভেতর দিয়ে পরিবহন করে তার লোক জীবনের সম্পদ। আর কবিতা তো সেই পরিবহনের মালিক।”

সময়ের আবর্তে পরিবর্তিত হয়েছে স্বদেশের চরিত্র। বদলে গেছে জীবনধারা। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে হাসিমুখে জীবন উৎসর্গ করেছেন ৩০ লক্ষ বাঙালি। সেই চেতনা আজ অশুভ রাজনীতির শৃংখলে আবদ্ধ। অবরুদ্ধ নাগরিক স্বাধীনতা। বিজিত মুক্তিযোদ্ধা আজ বিষাদগ্রস্ত হাতে লিখেন–

“সেই গ্রাম আজ আর গ্রাম নেই !

বুনো ঘ্রাণ নেই বাতাসের,

গণ-মানুষের আতর হারিয়ে ফেলেছে তার

সুগন্ধির খেই, 

নোংরা-আবর্জনা আর ঘেয়ো মাছির মতন

রাজনৈতিক ব্যভিচার ছড়ায় বৈদগ্ধ্যের

সুগন্ধি আজ চৌদিকে!

কোনো এক ফাঁকে

সরল মানুষের শিমুল তুলোর বিকেল বিক্রি হয়ে গেছে

লোভের তংকায়!

আমাদের আনন্দ-মুহূর্তগুলো

হত্যার শিকার হয়ে গেছে বহুদিন আগে, তার

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট

চাপা পড়ে আছে পুলিশের নির্দয় ডেস্কের অন্ধকারে !

আর আইনের হাত 

বিচারকের অন্ধ লোভাতুর সিদ্ধান্তের ডোলে

বীজধানের মতোই বন্দী,

আমি তাদের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই রোজ সকালে

তাদের দীর্ঘশ্বাসের হিসহোস বিকেলের ছায়ায় মিশে গেলে

কালো রাত নামে।

আমাদের পলায়নপর হৈমন্তিক কালে এই সব ঘটে!!!

(কবিতা : আমাদের কাল)

যদিও রোজ সকালে মানুষের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান কবি। বিকেলের ছায়ায় দেখেন তাদের দীর্ঘশ্বাস।

তবুও জীবনের প্রতি কী গভীর মমতায় উন্মুখ —

“হে আমার শস্যময় দিন

অমলিন ভোর দাও প্রতিদিন 

বাতাসের শয্যায় দাও ঋণ নিঃশ্বাসের

ফের দাও নতুন জীবন এই ধুলিধুসরিত পৃথিবীর,

এখানেই ভালোবাসা মৃত্যুর মতো অনিবার্য সঙ্গীতের

ক্ষীর বিছিয়ে দিয়েছে কচি লেবুর পাতার ঘ্রাণে—-

আমি তারে ভালোবাসি 

বিশ্বাসের মতো অকাতরে

হে জীবন !”

(কবিতা : ভালবাসি জীবন)

সুখ আর দুঃখের সাথে গলাগলি করে চলা’ই তো জীবন। কবি ও মানুষ। তাকেও স্পর্শ করে বিষাদ।

অবসরের দর্পণে দেখেন, তাঁর পৃথিবী ঝুলে আছে দোজখ আর বেহেস্তের মাঝখানে।

“আমার স্বপ্নগুলো বেহেস্তের মতো অর্গলবিহীন আর দুঃস্বপ্নগুলো

দোজখের ওম-ভরা

খরখরা এই পৃথিবী আমার

দোজখ আর বেহেস্তের মাঝখানে ঝুলে আছে।”

(আমার স্বপ্নগুলো)

কবি মাহবুব হাসানের ভাবনায় —

“কোন ইজম বন্দি হওয়া নয়; কবিতা বাঁচে তার মাটির গন্ধ আর সৃজনের মাল-মসলায় সেজে। নিজস্বতায়। সেই আত্মপরিচয় নিহিত আছে কবির আপন সংস্কৃতিতে।”

সমকালীন ভাবনার প্রতিচ্ছবি অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠেছে মাহবুব হাসানের প্রতিটি কবিতায়। তাঁর অসামান্য জীবনবোধ অঙ্কিত হয়েছে সাদাকালো শব্দের অনুপম গাঁথুনিতে। অবিবেচক ক্ষমতাবানদের নিসংকোচে প্রশ্ন করেন তিনি —

সততা কী খুব জরুরি পণ্য?

তার রং ঘন নীল কিংবা বর্ণহীন আকাশ, 

ধরাছোঁয়ার বাইরে

এমন এক সামগ্রী 

যা তোমরা লালন করো জীবনভর,

কিন্তু স্পর্শ করতে পারো না।

ওই আকাশ তোমার দখলে রেখেছো আজীবন

তোমার দখলে, 

মৃত্যু যেমন রেখেছে;

কল্পনার হরিৎ রঙের মতো

দীর্ঘস্থায়ী,

অস্পৃশ্য মানুষ যেন!!!

(কবিতা : সততা)

কবিতা কি? এই প্রশ্নের উত্তরে সেন্ট অগাস্টিনের মত আমিও বিশ্বাস করি,

“যদি জিজ্ঞাসা করা না হয়, আমি জানি।

যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, আমি জানি না।”

তবুও শ্রদ্ধেয় কবি ড.মাহবুব হাসানের অসাধারণ কবিতার প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা থেকেই যৎসামান্য লিখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। তাঁর প্রতিটি কবিতা নিঃসন্দেহে আরো অনেক বেশি কিছু লেখার দাবি রাখে। তাঁর লেখা অসংখ্য গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।

কবি মাহবুব হাসান এর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ গ্রন্থ সমূহ:

তন্দ্রার কোলে হরিণ, তোমার প্রতীক আমার আকাশ, স্বপ্নগুলো বিক্রি হয়ে গেছে, নির্জন জানালা, তিনি কথক ছিলেন, তাজা গ্রেনেড কিংবা দিবাস্বপ্ন, তোমার অহনা, চাঁদে পেয়েছে সেই কোন ছেলেবেলা, পরীর পঙক্তি ভোজ , শূন্যতার কাঁটাতারে শুয়ে আছি, নিসর্গের নুন 

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা