তাজ ইসলাম
মানুষ যুদ্ধ চায় না। মানুষ শান্তি চায়।তবু যুদ্ধ হয় দেশে দেশে।জাতিতে জাতিতে।যুদ্ধ বাঁধায় সাম্রাজ্যবাদ,আধিপত্যবাদ, ক্ষমতালোভী, দখলদার পক্ষ।
” যুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায় বিগত সাড়ে পাঁচ হাজার বছরের পৃথিবীর বুকে মোট যুদ্ধ হয়েছে সাড়ে চৌদ্দ হাজার।”( ওয়াহিদ সারো)।
এইসব যুদ্ধে পৃথিবী ধ্বংস হয়।দেশ,সভ্যতা,মানুষ ও মানবতা পড়ে হুমকিতে।তাই সচেতন মানুষ অবস্থান নেন যুদ্ধের বিপক্ষে, যুদ্ধবাজদের বিপক্ষে। মানুষের মাঝে সচেতন অংশের নেতৃত্বে থাকে সবসময় লেখক সমাজ।
লেখকদের প্রতিনিধিত্বশীল একটি কাগজের নাম : বুনন। বুনন– সাহিত্যের ছোট।ছোট কাগজের বড় কাজ যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে করা চলতি সংখ্যা ।
বুনন দাঁড়িয়ে গেছে দেশ বিদেশের লেখক সমাজকে নিয়ে মানবতার পক্ষে।কামান, বুলেট,আগ্রাসনের বিপক্ষে। কালি,কলম,হরফ তাদের সম্বল।
বুননের একাদশ সংখ্যার প্রতিপাদ্য বিষয় ” যুদ্ধ ও আগ্রাসন — বিরোধী সংখ্যা”।
এই সংখ্যার( ৭-১১১) পৃষ্ঠা সাজানো হয়েছে যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রবন্ধ দিয়ে। প্রবন্ধ লিখেছেন প্রথিতযশা লেখকগণ। তাদের জ্ঞানগর্ব প্রবন্ধ পাঠে বৃদ্ধি পায় জ্ঞানের পরিধি। উন্মোচিত হয় তথাকথিত বিশ্ব মোড়লদের চরিত্র ।মানুষ জানতে পারে অতীতের ইতিহাস।স্পষ্ট হয় হাল জামানার ঘটনার নেপথ্য কথা।কেন কীভাবে শুরু হয় ” ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন,অতঃপর যুদ্ধ;কিংবা ইসরায়েল- হামাস সংঘর্ষ, যুদ্ধ।(যুদ্ধকে ‘না’ যুদ্ধকে ‘ হ্যাঁ’– কবির আহমদ)।”
” ইসরাইল আসলে সম্পূর্ণ বেআইনি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত । কারণ এই রাষ্ট্রটি প্যালেস্টাইন ভূখণ্ড জবরদখল করে প্রতিষ্ঠা করা হয়।প্যালেস্টাইনের আদি বাসিন্দা সাত লক্ষ ফিলিস্তিনিকে সুপরিকল্পিত হিংস্রতার মাধ্যমে উৎখাত ও বাস্তু-চ্যুত করে ব্রিটেনের ইহুদি পররাষ্ট্র সচিব বালফুরের ১৯১৭ খ্রীস্টাব্দের ২ নভেম্বর ঘোষণার আলোকে ১৯৪৮ খ্রীস্টাব্দের ১৫ মে ইহুদিরা প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীন ইসরাইল রাষ্ট্র। “(তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী)।
ইতিহাসের সত্য এটিই যে ইসরাইল একটি অবৈধ রাষ্ট্র,জবরদখলকারী রাষ্ট্র। কঠোরভাবে অনেকে এই রাষ্ট্রকে জারজ রাষ্ট্র বলেও অবিহিত করে।
ইসরাইল তার যাত্রা শুরুই করেছিল জুলুম আর নির্যাতনের মাধ্যমে। এর এককালের প্রধানমন্ত্রী মোনাচেম বেগিনের সন্ত্রাসী ইরগুন বাহিনী ফিলিস্তিনের ” দির ইয়াসিন ” গ্রামের নিরস্ত্র হাজার হাজার জনতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একটি জনপদকে নরকে পরিণত করে।তারই ধারাবাহিকতায় ইসরাইলের বর্বরতা আজও আছে অব্যাহত।
ফিলিস্তিন মানব সভ্যতার আদি সম্ভ্রান্ত একটি জনপদ। প্রাবন্ধিক মুসা আল হাফিজ তার গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে জানিয়েছেন এই জনপদের আদি অদিবাসী কানানিয়ান। তারা এই সভ্যতার গোড়াপত্তন করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ত্রয়োদশ শতকে এর যাত্রা। এই কানানিয়দের বর্ণনা আছে বাইবেলেও।তারপর ফিলিস্তিনি জনতার উপর ভিন্ন ভিন্ন সময়ে চলছে ভিন্ন দখলদারদের নিপীড়ন,নির্যাতন। নির্যাতনের সর্বশেষ জালিম গোষ্ঠী ইসরাইল। ফিলিস্তিন ইসরাইলের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা,একটি জাতীর ইতিহাস,ভাগ্য বিড়ম্বনারা চিত্র জানতে হলে ব্যপক পাঠের প্রয়োজন।এই প্রয়োজনের চাহিদা পূরণ করতে আয়োজন করেছে “বুনন”।
“বুনন” একটি সাহিত্য পত্রিকা। সাহিত্যিক পরিভাষায় তাকে রাখা হয় লিটলম্যাগ পরিচিতিতে। আয়োজনের সূচীতে যুক্ত হয়েছেন প্রাবন্ধিক তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী।তার প্রবন্ধের নাম ” ইসরাইল: মধ্যপ্রাচ্যের দুষ্ট ক্ষত”। তিনি সাহসিকতার সাথে উচ্চারণ করেন, ” ইসরাইল যেহেতু সাম্রাজ্যবাদের অবৈধ সন্তান এবং এর কোন ভিত্তি নেই,সেহেতু এর অবস্থানই মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার মূল কারণ”। মূসা আল হাফিজ এই কার্যকারণের ধারাবাহিকতা, শুরুর ইতিহাস থেকে হাল আমলকে সবিস্তারে বিবৃত করেছেন তার প্রবন্ধ ” ফিলিস্তিনের জীবনী ক্যানানাইট ভূমি,স্বত্ব ও সত্তার রক্তঋণ” শীর্ষক প্রবন্ধে।
ইসরাইলের যুদ্ধ মূলত ক্রুসেড যুদ্ধ। ব্রিটিশ সেনাপ্রধান ১৯১৭ এর ৯ ডিসেম্বরে দম্ভের সাথে উচ্চারণ করেছিল ” আজ ক্রুসেডের সমাপ্তি হল”। তারা ভেবেছিল মুসলমানদের দ্বারা আর কোন প্রতিরোধ হবে না।মুসলমানগণ কখনও ফিলিস্তিন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হবে না।হ্যাঁ বিশ্ব মুসলিম ঐক্যবদ্ধ হয়নি।কিন্ত ফিলিস্তিনি মুসলমানগণ বসে নেই। শত বছর যাবৎ চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের সংগ্রাম।
এই সংখ্যায় প্রাবন্ধিকের তালিকায় আছেন, ড. মাহফুজ পারভেজ, কবির আহমদ,
ফারক ফয়সল, আফরোজা অদিতি,নাহার আলম,সারওয়ার চৌধুরী প্রমুখ ।
কবিতা , গল্প, ও অনুবাদ সাহিত্যের জমজমাট আয়োজনে সম্বৃদ্ধ একটি সংখ্যা।
ফজল হাসানের প্রবন্ধটি একটু ভিন্নরকম। তার বিষয়বস্ত যুদ্ধ ও আগ্রাসনের শিকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাহিত্যিক সমাজের কর্মতৎপরতা নিয়ে আলোকপাত করা। শিরোনামে অবশ্য স্থির রেখেছেন আক্রান্ত দুটো দেশকে।” যুদ্ধ ও আগ্রাসন: সমকালীন ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের সাহিত্য” শিরোনামের প্রবন্ধে যুদ্ধ কবলিত অন্য অনেক দেশের নাম উল্লেখ করেছেন। তবে শিল্প সাহিত্য চর্চার কথা বলতে গিয়ে আলোচনায় রেখেছেন ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনকেই । ফিলিস্তিনের সমকালীন গল্প সংকলনের নাম হিসেবে উল্লেখ করেছেন,
১. গাজা রাইটস ব্যাক : শর্ট স্টোরিজ ফ্রম ইয়ং রাইটার্স ইন গাজা,প্যালেস্টাইন ( প্রকাশ ২০১৪)
২. দ্যা বুক অব গাজা : অ্যা সিটি ইন শর্ট ফিকশন ‘ ( প্রকাশ ২০১৪)
৩. প্যালেস্টাইন +১০০: স্টোরিজ ফ্রম অ্যা সেঞ্চুরী আফটার নাকবা( প্রকাশ ২০১৯)
৪.বুক অব রামালাসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে তার প্রবন্ধে। যুদ্ধের ডামাডোলের ভিতরও একজন সাহিত্যিক নিজের দায়বোধ থেকে সরে যাননি।তার কলম সোচ্চার থাকে।তার হাতে কামান নেই,কলম আছে।কলম দিয়েই জানিয়ে যান নিজের দেশের কথা,অস্থিরতার কথা । বিশ্বের দরবারে পৌছে দেন যুদ্ধবাজদের ভয়াবহতার কথা।লেখক বলেন,
” সমকালীন ইউক্রেনিয় সাহিত্যে নারী লেখকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে এবং তাদের অবদান ও সাহিত্য সৃষ্টি চোখে পরার মতো।” আমরা বুঝতে পারি একজন নাগরিক সে নারী হোক পুরুষ হোক নিজের কর্তব্যে অনঢ় থাকেন সর্বাবস্থায়। যুদ্ধের ভয়াবহতা বা প্রতিকূলতা থামিয়ে দিতে পারে না তাকে ।
অনুবাদ সাহিত্যের সম্বৃদ্ধ আয়োজনে শামিল হয়েছেন আবুল কাইয়ুম।
” যুদ্ধ ও যুদ্ধবিরোধী কবিতা”য় যুক্তরাষ্ট্র,জার্মান,তুরস্ক,জাপান,
ইরাকসহ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবিদের কবিতা ভাষান্তর করেছেন ও আলোচনা করেছেন। আছে
কাফি কামালের ” যুদ্ধবিরোধী ছয়টি অনুবাদ কবিতা” । সব উল্লেখ করা এই আলোচনায় সম্ভব না।আমরা শুধু মাহমুদ দারবিশের একটি পঙক্তি উল্লেখ করে অনুবাদ পর্বের ইতি টানছি।
” আমার মায়ের হাতের কফির কথা মনে আছে তোমার,…. আমার কী অপরাধ তোমাকে আমার খুনিতে পরিনত করল? ( অনুবাদ: কামরুল আহসান)।
অল্প কথায় বিস্তর বলা হল কবিতার ধর্ম। কবিতার ভিতরে থাকে ভাব ও বক্তব্যের প্রচ্ছন্নতা। সবিস্তারে না বলেও অনেক কথা বলা হয় কবিতায়।
তমিজ উদদীন লোদী’ র কবিতা পাঠ করলে আলোচ্য বক্তব্যের সত্যতা উপলব্ধি করা যায়। কবি লেখেন,
নৃশংসতারও একটি সংজ্ঞা কিংবা সীমানা আছে/ সেই সীমানা অতিক্রম করেছে তারা/তারা দলে চলেছে জেনেভা কনভেনশন/ বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছে জাতিসংঘের সতর্কবাণী/ তারা চাইছে পোড়া মাটি/স্লো- মোশন ছবির মতো ধসে পড়েছে আবাসন/ সার সার শিশুদের লাশ/ অবরুদ্ধ! অবরুদ্ধ! কেবলই সন্ত্রাস!
কবিতা লিখেছেন: হাফিজ রশিদ খান,গোলাম কিবরিয়া পিনু, পীযূষকান্তি বিশ্বাস,তৈমুর খান,মুহাম্মদ ইসমাঈল,ফরিদা ইয়াসমিন সুমি,ফারহানা ইলিয়াস তুলি,গোবিন্দ ধর, আর্যনীল মুখোপাধ্যায়, তোফায়েল তফাজ্জলসহ অনেকেই।
যুদ্ধের ইতিহাসে সবাই যোদ্ধা । কেউ মানবতার পক্ষে,কেউ বিপক্ষে। কেউ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে,অন্যরা বিপক্ষে।কেউ যুদ্ধের পক্ষে,কেউ শান্তির পক্ষে।মূলত সবাই যোদ্ধা। যার যা আছে তা নিয়েই দাঁড়িয়ে যায়।
কবি কলম নিয়ে দাঁড়ান। লেখেন দ্রোহ,ক্ষোভ,প্রতিরোধের কথা।কবি জাহাঙ্গীর আজাদ লিখেছেন যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা।যুদ্ধের পরিনতির বর্ণনায় কবি লিখেন,
“এভাবেই যুগ পরম্পরায় / জননীর দগ্ধ শ্বাসনালীর সাথে/ থেতলে থাকে ইতিহাসের পাতা/(প্যালেস্টাইন)।”
আর শাদমান শাহিদ দিয়েছেন অসম যোদ্ধাদের কাব্যময় সাহস।শাদমান লিখেন,
“গাজা/….তোমার পায়ের নীচে রয়েছে পবিত্র রক্তসাগর/…. ভয় পেয়ো না তুমি…. অনেক মানচিত্রের দাগ তোমার দিকে তাকিয়ে….( গাজা)”।
হেনরী স্বপন দুটি কবিতা লিখেছেন বুনন এর এই সংখ্যায়। আমরা দুটো কবিতা উল্লেখ করছি না। মাত্র দুটো লাইন পেশ করছি।” ইসরায়েলি বোমার আঘাত ফিলিস্তিনি মরে/ মোড়লরা সব জিকির করে হাজার শিশু মরে”। বুননের কবিতার মিছিলে আছেন জিয়া হক,পলিয়ার ওয়াহিদ,স.ম. শামসুল আলম,মান্নান নুর,সোহেল বীর,কবীর হোসেন প্রমুখ।
“কিতাবে পড়েছি, মাইট ইজ রাইট নীতি মানবিকতার অভিধানে তুচ্ছ/ সেই যুগ এখন অনবরত পদপিষ্ট ” বলে কবিতায় ঘোষণা দিয়েছেন কবি মহিবুর রহিম।
বুননের চমৎকার সূচী বিন্যাসে একগুচ্ছ প্রবন্ধের পর কবিতা।তারপর অনুবাদ।
তারপর আবার কবিতা,
অনুবাদ,গল্প,অনুবাদ,কবিতা। দেশ বিদেশে অবস্থানরত বাংলা ভাষাভাষী প্রায় ১১১ জন কবির কবিতা আছে ১১ টি পর্বে।
৭ টি পর্বে গল্প লিখেছেন ১৩ জন গল্পকার।
“রাম মন্দির কিংবা বাবরি মসজিদ! সেটা নিয়ে বিরোধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে স্থানে স্থানে,দেশে দেশে।….. আগুনের স্ফুলিঙ্গ সারাদেশের মতো এসে ছড়িয়ে পড়ে হাইলাকান্দিতেও।” যুদ্ধ বা দাঙ্গা যেখানে শুরু হয় সেখানে আটকে থাকে না।তার প্রভাব প্রত্যন্ত হাইলাকান্দিতেও পড়ে। আমির হোসেন তার গল্প
” সয়ফুল মিয়ার জীবন সংগ্রাম” বর্ণনা করতে করতে স্পষ্ট করেছেন বিষয়টি।
যুদ্ধ শুধু রাষ্ট্র,সমাজ,দেশ,ভূগোল, পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে না।যুদ্ধের ভয়াবহতায় মানুষের মানসিক বৈকল্যওতাও বৃদ্ধি করে।
সন্তোষ ঢালীর গল্প এনগেজমেন্ট।গল্পের মূল বিষয় ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ এর পৃথিবী কাঁপানো ঘটনা আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধ্বংস।যার দোষ চাপানো হয়েছিল ওসামা বিন লাদেনের উপর।পরবর্তীতে এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে তর্কবিতর্ক জমে ওঠেছিল । বিতার্কিকদের মতে এই ঘটনা ইসরাইল ও আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ঘটানো।এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধ বাধানোর ক্ষেত্র প্রস্তত স্বরূপ।
যেমনটা হয়েছিল ইরাকের ক্ষেত্রে। সমগ্র ইরাককে ছাই ভস্ম করার বহু বছর পর জানা গেল ইরাকে রাসায়নিক,পারমানবিক বা মানব সমাজের জন্য হুমকি মূলক কিছুই ছিল না।সে যাই হোক গল্পকার গল্প বিস্তৃত করেছেন নিজের বোধ বুদ্ধি মতো।তিনি গল্পে বুঝালেন একটি ঘটনা কীভাবে মানুষের বোধ বুদ্ধির উপর প্রভাব ফেলে। মানুষের বিষাদ,হতাশা বৈকল্যে কীভাবে মানুষকে বিকারগস্ত করে তুলে! ধ্বংস হয় স্বাভাবিক চিন্তা। গল্পের আয়েশার চরিত্র চিত্রিত করে সে বিষয়টিই স্পষ্ট করেছেন।
সন্তোষ ঢালীর গল্প এনগেজমেন্ট এর কেন্দ্রীয় চরিত্র আয়েশার পরিনতির মাধ্যমে সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন।
সূচীতে উল্লেখ আছে ১৩৯ পৃষ্ঠায় মঈনুস সুলতানের গল্প।আদতে এই পৃষ্ঠায় কোন গল্প নেই। মঈনুস সুলতান আছেন ১৯২ পৃষ্ঠায়। অন্যান্য গল্পকারগণ হলেন যথাক্রমে মনি হায়দার,সাদিয়া সুলতানা, রুদ্র সুশান্ত, গৌতম বিশ্বাস,মিলু শামস প্রমুখ।
১৩ জন গল্পকার ৭ পর্বে বিন্যস্ত।
বানান বিভ্রাট কম। মূল্যবান এ সংখ্যাটির কাগজের মানে আপোষ করেছেন কর্তৃপক্ষ, ছেপেছেন নিউজপ্রিন্ট কাগজে। তবে ভালো মানের নিউজপ্রিন্ট।
এবং এই কাগজটি বিজ্ঞানের উৎকটতা মুক্ত একটি কাগজ।দাম বেশি হবেই।
মূল্য ৪০০ টাকা।মূল্যটা তাই একটু বেশি মনে হয়।
তবে লেখার মান ভালো বিধায় বিনিময় মূল্য বেশি হলেও বেশি না।কাগজের মান বাড়িয়ে আরও দু দশ পঞ্চাশ টাকা যোগ করলেও করা যেত।
বুননের প্রথম সংখ্যার প্রকাশকাল ২০০১ মার্চ।তারপর এই দুই যুগের সংখ্যার শেষ সংখ্যা ১১ তম।
সম্পাদক খালেদ উদ-দীন।প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ।প্রচ্ছদও প্রশংসনীয়। প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ঈসাব্দ।
যোগাযোগ ৫০৪, কাকলী শপিং সেন্টার,জিন্দাবাজার,সিলেট-৩১০০
বুনন প্রচার প্রসারে এগিয়ে চলবে,সম্পাদক ও তার কর্মীবাহিনী আরও আরও উপহার দিবে সম্বৃদ্ধ সংখ্যা। বনের খেয়েই হোক,নিজের খেয়েই হোক মোষ তারা তাড়াবেই এই আশা আমাদের।