খালিদ সাইফ
রাইসুলের কথার মধ্যে রসিকতা এবং আক্রমণের একটা ভারসাম্য থাকে, যে জন্য মানুষের সাথে প্রচুর কথা বলার পরও কোনোদিন ঝগড়াঝাটি হয় না। বাজারের মধ্যে তার কেশবিন্যাসের দোকানে প্রতিদিন প্রচুর লোক চুল কাটানোর জন্য আসলেও কারো সাথে মনোমালিন্য প্রায় শূন্যের কোঠায়। পরিস্থিতি যদি কখনও সে-দিকে মোড় নিতে চায় তাহলে সাথে সাথে রাইসুল চুপ হয়ে যায় কিংবা কথার মধ্যে আক্রমণের ভাগটা কমিয়ে দ্বিগুণ করে দেয় রসিকতার পরিমাণ। এভাবে ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত রূপ নেওয়া থেকে সে নিয়ন্ত্রণ করে। শুধু তা-ই নয়, পুরো পরিবেশকে তার প্রভাববলয়ের মধ্যে নিয়ে আসে। ঘুড়ি যেভাবেই উড়ুক কিন্তু নাটাই থাকে তার হাতে। এই যে মানুষকে সতর্কভাবে আক্রমণ করে রাইসুলের কথা চালিয়ে যাওয়া, আপাতদৃষ্টিতে এটাকে নিরীহ মনে হলেও এর পেছনের আছে এক নাতিদীর্ঘ ইতিহাস।
সেই ইতিহাস রওশনের মনে হলেই মনে পড়ে দুজন বিহারীসহ জনাবিশেক পাকসৈন্য ঢুকেছিল টিয়ামন গ্রামে। পুরো গ্রাম অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় জ্বালিয়ে দিয়েছিল তারা। ওদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল দুই বিহারী। কোনো সন্দেহ নেই, পাকবাহিনীর প্রশ্রয় পেয়ে কিছু বিহারী উনিশশো একাত্তর সালে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে থাকে। তাদের দেখানো পথে পাকবাহিনী বাঙালিদের উপর অত্যাচার শুরু করে। কিন্তু আবার এটাও ঠিক, অধিকাংশ বিহারী পাক বাহিনীর অপকর্মের সাথে যুক্ত ছিল না।
তারা কি চেয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীন হোক? সবার মনের গহীনের খবর উদ্ধার করা কঠিন। কিছু প্রজা সাধারণ থাকে নিরীহ প্রকৃতির, তারা জীবন-জীবিকা নিয়েই সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। রাজনীতি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না। বিহারীরা সংখ্যায় এমন লোকই ছিল বেশি। তাছাড়া দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বিহারী জনতার বিচারে শাস্তিও পেয়েছে। প্রায় একই ঘটনা ঘটে বাঙালির ক্ষেত্রেও। কিছু বাঙালি পাক-সৈন্যের সহযোগী ছিল কিন্তু অধিকাংশ ছিল স্বাধীনতার স্বপক্ষে।
রাইসুল যে রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে, সমস্যা যেন জটিল দিকে না-গড়াতে পারে – তার এই সংযমের কারণ হলো সে একজন বিহারী। সে জানে যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয় তাহলে তারপক্ষে ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সবকিছু তার বিপক্ষে চলে যাবে। তার সংখ্যালঘু-মন সব-সময় তাই আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যায়। যে-কারণে রক্তমাংসের মানুষ হওয়ার পরও সে রাগ করতে পারে না; একজনকে ইচ্ছে হলেই একটা চড় কষিয়ে দিতে পারে না। খানিকটা ছাড় দিয়ে হলেও সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয়।
বাজারে গিয়ে ঝংকার সিনেমা হলের পাশে রাইসুলের দোকানেই রওশন চুল কাটায়। রওশনের জন্ম একাত্তরের পরে হলেও মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে সচেতন সে। নিজের ইতিহাস জানার জন্য নিয়মিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে। যে সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডের সাথে সে জড়িত সেই কাজের জন্য ইতিহাসের জ্ঞান খুবই দরকার। যে সমস্ত মুরুব্বি একাত্তর দেখেছেন সুযোগ পেলেই সে তাদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি শোনার চেষ্টা করে। আশার কথা, মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে কাজ হয়েছে প্রচুর। তাই নিজ চোখে উনিশশো একাত্তর না দেখলেও পড়া ও শোনার মাধ্যমে তার বোধ-জ্ঞানকে পরিচ্ছন্ন করার চেষ্টায় কখনো বিরতি দেয় না। মুক্তিযুদ্ধকে সে বাঙালির সুবিশাল অর্জন মনে করে, বিষয়টি সম্পর্কে না-জানলে তাই মনে হয় সে সচেতন মানুষ হতে পারবে না। এই ইতিহাস জ্ঞানকে সে প্রযোগ করে রাইসুলের ওপর। এ-জ্ঞান দিয়ে তাকে সে খুব সহজেই পড়ে ফেলতে পারে। তার ব্যক্তিত্বের এই টানটান ভারসাম্যকে মনে হয় পরাজিতের সতর্ক অবস্থা। দোকানে চুল কাটতে গেলেই সে পড়ে রাইসুলকে, পর্যবেক্ষণ করে, ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে তার মনের অনেক ভেতর। সে জানে এভাবে একতরফা কারো সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসাটায় ভুল হতে পারে। কিন্তু কাজটি তার কাছে নেশার মতো মনে হয়। ভাবনা থেকে সে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না। তবে সিদ্ধান্ত নেয়, রাইসুলের সাথে কথা বলে অস্পষ্টতা ঝেড়ে ফেলতে হবে । ভাগ্য যে মানুষ মানুষের চিন্তাকে পড়তে পারে না, পারলে কেমন অনাসৃষ্টি তৈরি হতো! যদি রাইসুল জানতো তার সম্পর্কে রওশনের চিন্তা-ভাবনার প্রকৃতি তাহলে হয়ত সে তার সাথে স্বাভাবিকভাবে কথাও বলত না। আড়ষ্ট হয়ে যেত, আরও সতর্ক হয়ে পড়ত আচরণে। এখন সে তাকে মনে করে আর দশজন অন্য খরিদ্দারে মতোই। যদি জানতো ভবিষ্যতে তাদের নিয়ে সে সিনেমা বানাবে, অগোচরে তার থেকে তথ্য নিচ্ছে, গোয়েন্দাগিরি করে যাচ্ছে – তাহলে পুরো পরিকল্পনা মাটি হয়ে যেত। সে অনেক কিছুই জানতে পারত না ।
সে রাইসুলের মন বোঝার চেষ্টা করে যায়। যদি মুক্তিযুদ্ধের মতো ঘটনা ভবিষ্যতে আবার ঘটা শুরু হয় তাহলে কি রাইসুল পাক বাহিনীর মতো কোনো বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড শুরু করবে? এ প্রশ্নের জবাব হঠাৎ করে দেওয়া কঠিন। তবে তার ধারণা হলো, এবার ওদের কর্মকাণ্ড হবে অনেক সতর্কতামূলক। হুট করেই একটা কোনো পক্ষে ওরা যোগদান করবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওদের কিছু মানুষের বাড়াবাড়ির পরিণাম এখনো ওরা ভোগ করে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চয় তারা শিক্ষা নেবে। রাইসুলের কথাবার্তার মধ্যে ভারসাম্য থাকলেও তাকে অনেক নিরীহ মনে হয়। তাকে সে বিচার করে আর ভাবে: আচ্ছা, রাইসুলের বিহারী সম্প্রদায় কি বাংলাদেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক? প্রশ্ন যেমন জটিল উত্তর বের করাও তেমন কঠিন। তবে এখানকার অধিকাংশ বিহারী সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে খুব ভালো অবস্থায় নেই। খুব সম্ভব বড় কোনো সরকারি চাকরি তারা পায় না। অবশ্য তথ্যটির ব্যাপারে সে নিশ্চিত নয়। রাইসুলকে বিষয়টা জিজ্ঞেস করতে হবে। তারা ভোট দিতে পারে কিন্তু বাঙালি সমাজে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বললেই চলে। চান্নু বিহারী অবশ্য এদিক থেকে ব্যতিক্রম। ব্যবসা করে বিহারীদের মধ্যে থেকে অনেক উপরে উঠে গেছে। শত কোটি টাকার মালিক এখন সে। তাকে বিহারি-বাঙালি-সরকার সবাই খুব তোয়াজ করে চলে।
তাহলে বাংলাদেশে বিহারীরা ভালো নেই এ কথা কি বলা যায়? আসলে চান্নু বিহারী হলো এই সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ব্যতিক্রম। চান্নু বিহারীকে দিয়ে তাদের সম্প্রদায়কে বিচার করলে ভুল করা হবে। এই সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ এখনও দরিদ্র এবং উচ্চশিক্ষিত লোকও এদের মধ্যে কম। এদের বিশাল একটি অংশ বাজারে ছোটখাটো ব্যবসার সাথে জড়িত। অধিকাংশ তেমন কিছু করতেও পারে নি ।
রাইসুল অবশ্য এদিক থেকে সৌভাগ্যবান। তার একটি আনন্দময় মন আছে। সে চুল কাটে আর খরিদ্দারদের সাথে আনন্দ-ফুর্তিতে দিন কাটিয়ে দেয়। এই যে আনন্দ-ফুর্তিতে সময় কাটায় এটা কি তার মুখোশ? অবশ্য বিহারীদের সম্পর্কে এমন নেতিবাচক ভাবনার জন্য তার খারাপও লাগে। তারা করে নি এমন কোনো অন্যায় কল্পনা কি সে তাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে? সে ভাবে, এমন হলে অবশ্যই নিজেকে সংশোধন করে নিতে হবে। চূড়ান্ত বিচারে সেও একজন সংবেদনশীল মানুষ। মাঝে মাঝে সে নিজেকে প্রশ্ন করে এবং এর জবাব খোঁজার চেষ্টা করে। এই আনন্দ-ফুর্তির মাধ্যমে কি সে আসলে জীবনের বঞ্চনা ও অপ্রাপ্তিকে ভুলে থাকার চেষ্টা করে! সত্যিই ইতিহাসের অদ্ভুত এক ম্যারপ্যাচের মধ্যে পড়ে গেছে তারা। উনিশশো সাতচল্লিশে উপমহাদেশ ভারত-পাকিস্তান দুটি রাষ্ট্রে ভাগ হলে তারা চলে আসে পূর্ব পাকিস্তানে। পাকিস্তান আমলে তারা পূর্ব পাকিস্তানে যে যেখানে ছিল সেখানে ভালোই ছিল। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় একাত্তর সালে। যে স্বপ্নের পাকিস্তানের জন্য ত্যাগ করেছিল ভারতের মতো বিশাল ও বৈচিত্র্যময় দেশ, সেই পাকিস্তানকে একাত্তর সালে ভাগ হয়ে যেতে দেখে তাদের অনেকেই পাক-আর্মির সাথে যোগ দিয়ে পূর্ববাংলার সমস্যা সমাধানে রক্তক্ষয়ী ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড শুরু করে। এই অংশগ্রহণের কারণে পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলো কখনো কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে আবার কোনো কোনো সরকার তাদের ব্যাপারে একেবারে নিশ্চুপ থেকেছে। প্রতিদিন ভোরে সূর্য উঠে তাদের জীবনে হতাশা নিয়ে। একটি নতুন দিন আসে যেন একটি ব্যর্থতার কালিমা লেপে দিতে ।
রওশন রাইসুলকে বলে, আপনি সত্যিই সৌভাগ্যবান মানুষ। জীবনে এত সমস্যা নিয়েও আপনি হাসতে পারেন।
চুল কাটতে কাটতে সে তার দিকে এমনভাবে তাকায় যেটাকে বহু প্রশ্নপূর্ণ তাকানো বলা যেতে পারে। তারপর সহজ হয়ে স্বাভাবিকভাবে বলে, দুঃখ নিয়ে দিন কাটায়ে কি লাভ! আনন্দের মধ্যে সময় কাটানোই ঢের ভালো।
রওশন আয়নার ভেতর দিয়ে সম্মতিসূচক মনোভঙ্গিতে তার দিকে তাকায়।
আজ বাংলাদেশে এই সম্প্রদায়ের মানুষ যে অবস্থায় আছে তার জন্য তো এরা দায়ী নয়। এদের পূর্বপুরুষেরা ব্রিটিশ আমলের শেষ দিকে একটি বিষয়ে একমত হয়েছিল যে মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাসভূমি দরকার। তারা যখন তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে দেখেছিল তখন হিজরত করে চলে আসে তখনকার পূর্বপাকিস্তানে। এদেশকে তারা মনে করেছিল নিজেদের দেশ। কিন্তু মাঝখানে উনিশশো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর তারা যেন সাধারণ নাগরিকের মর্যাদা হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু একাত্তরের পরে বিহারী সম্প্রদায়ের যে ছেলেটি এদেশের জন্মগ্রহণ করেছে তার কি দোষ? এসব প্রশ্ন তাঁর মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। সে জানে বিষয়টি অনেক জটিল। সহজে এর সমাধান হওয়া কঠিন, কিন্তু সমাধান যে করা যাবে না বিষয়টা এমনও নয়। অবশ্য রাইসুলের সাথে এসব নিয়ে কোনোদিন কথা হয় নি। অথচ তার সাথে দেখা হলেই মন ইতিহাসের ভেতর ঢুকে পড়ে। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে নানা প্রশ্ন উদয় হতে থাকে। তারা কি বিহারীদের অধিকার হরণ করছে?
রওশন উত্তরে মনকে বলে, কখনো না। আমরা যদি তাদের অধিকার হরণই করব তাহলে চান্নু বিহারী এত ধনী হতে পারতো না।
মনের উত্তর, চান্নু বিহারী তো সৌভাগ্যবান মানুষ। রাষ্ট্রের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা অতিক্রম করে সে বুদ্ধি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উপরে উঠতে পেরেছে।
অন্যেরা সে চেষ্টা করে না তাই পারে না।
মন দ্বিমত পোষণ করে, অন্যদের তোমার রাষ্ট্র সে সুযোগ দেয় না। প্রকৃত কল্যাণ রাষ্ট্র বঞ্চিতদেরও সুযোগ করে দেয় উপরে উঠতে।
ব্যাপারটা নিয়ে আসলে রাইসুলের সাথে কথা বলতে হবে। সত্যি কি রাষ্ট্র তাদের এগিয়ে যাওয়াতে বাধা সৃষ্টি করে। নানা দিক থেকে কি তারা রাষ্ট্রের বঞ্চনার স্বীকার। আবার ভাবে আচ্ছা রাইসুল কি সন্দেহ করবে না যদি এসব প্রশ্ন করে? সেকি নিরাপদে সব প্রশ্নের উত্তর দেবে? তাকে কি সে বিশ্বস্ত মনে করবে? এত জিজ্ঞাসা চিহ্ন নিয়ে কি সামনে এগোনো যায়?
তার ভেতরে হঠাৎ ভয় কাজ করতে থাকে। তাকে কি রাইসুল সাহায্য করবে? তাদের সবকিছু যে তার জানা দরকার! হঠাৎ মাথায় চিন্তা আসে, বিহারী পাড়ায় বাসা ভাড়া করে নিয়ে থাকলে কেমন হয়। তাদের ভেতরে মাস ছয়েক থাকলে অনেক কিছু জানতে পারবে। তখনই সম্ভব হবে চমৎকার একটা চিত্রনাট্য লেখা। শুধু উদ্দেশ্য গোপন রাখতে হবে। কত নৃবিজ্ঞানী অপরিচিত জায়গায় গিয়ে বছরের পর বছর থেকে গবেষণা করেছেন। জনগণ কিছুই বুঝতে পারে নি। সেও পারবে। আর যদি তাদের কিছু মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে তাহলে আনন্দের সাথে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। রাইসুলও তার কাছে কোনো কিছু গোপন করবে না। কেননা এই স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র নির্মাণ হলে তাদের সমস্যার কথাই তো দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারবে। তখন তাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক চাপ আসবে সরকারের ওপর। সরকার বাধ্য হবে তাদের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে। এতে তো তাদেরই উপকার হবে। মহররমের সময় তারা যে তাজিয়া বানায় তা অনন্য। লাঠি খেলার ঐতিহ্যও এখনো তারা ধরে রেখেছে। এই দৃশ্যগুলো সিনেমাটাতে আনতে পারলে তা আলাদা একটা মাত্রা যুক্ত করবে।
তার মনের গোপন পর্দাটি সে-মুহূর্তে খুলে যায়। রওশন আলি বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানিয়েছে, তার কোনো কোনোটি দেশের মধ্যে দু-একটি পুরস্কার ও সম্মাননা পেলেও আন্তর্জাতিক কোনো পুরস্কার বা স্বীকৃতি আজ পর্যন্ত পায় নি। যদি বিহারীদের নিয়ে ছবিটি তৈরি করতে পারে তাহলে তার আন্তর্জাতিক পুরস্কার কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। নাপিত রাইসুলকে তার কাজে লাগাতেই হবে – যেভাবেই হোক।
০২ মে ২০২২